রাতের আধাঁরে এক উপজেলার জন্য বরাদ্দকৃত সরকারের ভর্তুকি দেওয়া ইউরিয়া সার অন্য উপজেলায় পাচারকালে ৫০ বস্তা (২৫শ’ কেজি) সার জব্দ করেছে প্রশাসন।
নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সরকারের সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য ভর্তুকির সার পাচারের ঘটনায় দুই উপজেলার প্রশাসন শক্ত অবস্থানে থাকায় সারের ডিলার মামলা থেকে রেহাই পেতে এবং তার লাইসেন্স রক্ষার জন্য স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তির কাছে দৌঁড়ঝাপ থেকে শুরু করে মিডিয়াকর্মীদের ম্যানেজের জন্য নানা তৎপরতা শুরু করেছেন।
শনিবার সকালে আগৈলঝাড়া উপজেলার বাশাইল এলাকার অসংখ্য প্রান্তিক কৃষকরা অভিযোগ করেন, ডিলার আবদুল জলিল কখনই তাদের চাহিদা মতো সার দেয়নি। এ ছাড়া প্রায় সময়ই সারের ডিলারের দোকান বন্ধ থাকায় তারা সরকারের ভর্তুকি দেওয়া সার নায্যমূল্যে ক্রয় করতে পারেননি। ফলে চড়ামূল্যে তাদের বাহির থেকে সার ক্রয় করতে হচ্ছে। কৃষকের ভাগ্য বঞ্ছিত করে সার পাচারের ঘটনায় তারা (কৃষক) ডিলার জলিল ও তার ছেলের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন।
আগৈলঝাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দোলন চন্দ্র রায় জানান, ইতোমধ্যে বিষয়টি আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠণ করে প্রতিবেদন পাওয়ার পর ডিলারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। গৌরনদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মামুনুর রহমান জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সার-বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি ছুটিতে রয়েছেন। তিনি অফিসে যোগদান করার পর এ বিষয়ে আলোচনা করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
আগৈলঝাড়া উপজেলার বাশাইল গ্রামের লালচান বেপারীর পুত্র নছিমন চালক মিলন বেপারী জানান, বৃহস্পতিবার রাতে বাশাইল বাজারের সারের ডিলার আবদুল জলিল হাওলাদারের পুত্র ফজলুল হক হাওলাদার বাশাইল বাজারের গোডাউন থেকে ৫০ বস্তা ইউরিয়া সার টরকী বন্দরে নেওয়ার জন্য তার নছিমন ভাড়া করেন। তবে সারগুলো যে পাচার করা হচ্ছিলো তা তার জানা ছিলোনা।
সূত্রমতে, আগৈলঝাড়া উপজেলার বাশাইল বাজারের সারের ডিলার আবদুল জলিল হাওলাদার জব্দ করা সার নছিমনযোগে গৌরনদী উপজেলার টরকী বন্দরে পাচার করছিলেন। পথিমধ্যে গৌরনদী উপজেলার পশ্চিম বার্থী এলাকার সরদার বাড়ি জামে মসজিদের সামনে থেকে থানা পুলিশের উপস্থিতিতে ৫০ বস্তা (প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি) ইউরিয়া সার জব্দ করেন উপজেলা প্রশাসন।
গৌরনদী অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফুল ইসলাম প্রিন্সসহ থানা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় পাচারকাজে জড়িত সার ডিলারের পুত্র ফজলুল হক হাওলাদার। পরে জব্দকৃত সার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার জিম্মায় রাখা হয়।