ফরিদপুরের সালথায় ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকার দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সাথে বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে মারিজ সিকদার (৩০) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। এতে উভয় প্রার্থীর আরো অন্তত ২০ সমর্থক আহত হয়। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভাংচুর করা হয়েছে অন্তত ৫০টি বসতঘর।
শনিবার দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের খারদিয়া এলাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সালথা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কয়েক সর্টগানের ফাকা গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, যদুনন্দী ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে গত ১৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী আবদুর বর মোল্যা মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। তার বিপরীতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন আওয়ামী লীগ সমর্থক গ্রাম্য মাতবর মো. রফিক মোল্যা ও নুরজ্জামান টুকু ঠাকুর। রফিক মোল্যা ও টুকু ঠাকুর খারদিয়া এলাকার একই দলের নেতৃত্ব দেন কয়েক বছর। তাদের বাড়িও একই গ্রামে।
গত এক মাস আগে নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিয়ে বিরোধ জেরধরে রফিকের কাছ থেকে আলাদা হয়ে টুকু ঠাকুর নৌকার মনোনীত প্রার্থী বর মোল্যা ও তার সমর্থক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো. আলমগীর মিয়ার দলে যোগ দেন। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সরকার দলের প্রার্থী রব মোল্যার সমর্থক আলমগীর মিয়া ও টুকু ঠাকুরের সাথে বিদ্রোহী প্রার্থী রফিকের বিরোধ চলছিল। এরই জেরধরে শনিবার সকাল থেকে খারদিয়া এলাকায় উভয় প্রার্থীর হাজারো সমর্থকেরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জড়ো হতে থাকে। একপর্যায় দুপুর ২টার দিকে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সংঘর্ষ চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। সংঘর্ষচলাকালে কয়েকটি বসতঘরে ব্যাপক ভাংচুর চালানো হয়।
এতে মারিজ সিকদার, নাসির মোল্যা, রহিম ম-ল, রশিদ শেখ, সাকির মোল্যা ও টেপু শেখসহ উভয় প্রার্থীর অন্তত ২০ আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে ফরিদপুর শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরমধ্যে বিকেলের দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রফিকের সমর্থক মারিজ সিকদার নামে এক যুবক মারা যান। তিনি খারদিয়া গ্রামের সওরাফ সিকদারের ছেলে।
এদিকে মারিজের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে যাওয়া পর এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত নৌকার মনোনীত প্রার্থীর সমর্থকদের অন্তত ৫০টি বসতবাড়িতে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করার খবর পাওয়া গেছে।
ফরিদপুরের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার সুমিনুর রহমান বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রচুর পরিমান শর্টগানের গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়। তবে কতগুলো শর্টগানের গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করা হয়েছে তা হিসাব না করে বলা যাচ্ছে না। ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।