কৃষি হচ্ছে অর্থনীতির প্রাণ। কৃষি খাতে নানা বরাদ্দ ও ভর্তুকি দিয়ে থাকে সরকার। কৃষকের কাছে সার ও বীজ সহজলভ্য করতেও সরকার গুরুত্ব দিয়ে থাকে। এজন্য ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত ডিলার নিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু সেটি কি ঠিকঠাক বাস্তবায়িত হচ্ছে? রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার ১০ ইউনিয়নে ১০ জন বিসিআইসি সার ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ইউনিয়ন পর্যায়ে গিয়ে তাঁরা সার বিক্রি না করে তা করছেন পৌর শহরে। এতে সার পেতে কৃষকদের ভোগান্তিসহ অতিরিক্ত অর্থ ও সময় ব্যয় হচ্ছে।
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, কৃষকেরা যেন সহজে হাতের নাগালে সঠিক দামে সার কিনতে পারেন, এজন্য সরকার ইউনিয়ন পর্যায়ে সারের ডিলার নিয়োগ করে। উপজেলাটির রামনাথপুর, রাধানগর, লোহানীপাড়া, মধুপুর, বিষ্ণুপুর, দামোদরপুর, কালুপাড়া, কুতুবপুর, গোপীনাথপুর ও গোপালপুরেও এর অন্যথা হয়নি। কিন্তু ইউনিয়ন পর্যায়ে নিয়োগ পাওয়া ডিলাররা কেউ ইউনিয়নে গিয়ে সার বিক্রি করছেন না। তাঁরা সবাই বদরগঞ্জ পৌরসভায় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুলে সার বিক্রি করছেন। কেউ কেউ ইউনিয়নের সাইনবোর্ড পৌর শহরে সারের দোকানে ঝুলিয়েছেন।
প্রত্যন্ত এলাকা, এমনকি ১৬ কিলোমিটার দূর থেকে সার নিতে পৌরসভায় আসতে হচ্ছে কৃষকদের। অথচ নিজ ইউনিয়নে থেকে সার কিনতে পারলে তাঁদের দুর্ভোগ কমত। পরিবহন খরচ ও সময় কম লাগত। অন্যদিকে পৌরসভার খুচরা দোকানগুলোয় সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেশি দাম দিয়ে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) সার কিনতে হয় তাঁদের। ডিলার নিয়োগে রাজনৈতিক নেতাদের প্রভাবও দেখা গেছে। ডিলারদের মধ্যে রয়েছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, স্থানীয় যুবলীগ নেতা ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান। দামোদরপুরের কৃষকদের অভিযোগ, ইউনিয়নটির ডিলার আট মাস আগেই মারা গেছেন। তাঁর নামে উত্তোলন করা সার কোথায় বিক্রি হচ্ছে, সেটাও জানেন না তাঁরা। অন্যদিকে ডিলারদের কাছ থেকে সার কিনে ব্যবসা করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।
কৃষকদেরকে এই ধরণের ভোগান্তি থেকে মুক্তি দিতে হবে। সরকার এ ক্ষেত্রে কার্যকরি পদক্ষেপ নেবে এটাই প্রত্যাশা।