চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মোঃ কামরুল হাসান এনডিসি বলেছেন নদী ভালো থাকলে ডলফিন ভালো থাকবে,জীব বৈচিত্র্য রক্ষা পাবে। হালদা নদী দেশের অনন্য ও অসাধারণ সম্পদ। এই নদী রক্ষা করা প্রত্যেকের নৈতিক দায়িত্ব। মানুষের প্রয়োজনে, দেশ ও দশের প্রয়োজনে হালদা রক্ষা করা সময়ের দাবীতে পরিনত হয়েছে। মানুষের অতি উপকারী নিরীহ এই স্তন্যপায়ী প্রানী মাছ ও জীব বৈচিত্র্য রক্ষা করে থাকে। এই উপকারী প্রানীটি রক্ষার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্তরিক ভাবে কাজ করতে হবে। এজন্য হালদা নদীর দুই পাড়ের অধিবাসী, জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনকে এক সাথে আন্তরিক ভাবে কাজ করতে হবে। সর্বপরি এজন্য মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। তিনি রোববার আন্তর্জাতিক মিঠা পানির ডলফিন দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। তিনি বলেন প্রশাসন একার পক্ষে কোন দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়। এজন্য সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার বলে তিনি উল্লেখ করেন।
শুশুক ডলফিন থাকে যদি,ভালো থাকবে মোদের নদ নদী ' এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে হাটহাজারীতে আন্তর্জাতিক মিঠাপানির ডলফিন দিবস ২০২১ পালিত হয়েছে।
উপজেলার গড়দুয়ারা ড. শহীদুল্লাহ একাডেমি মিলনায়তনে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগ যৌথ ভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। এ উপলক্ষে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক( সার্বিক) আ. স. ম জামশেদ খন্দকার। অনুষ্ঠানে মুল প্রবন্ধ পাঠ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত হালদা গবেষণা কেন্দ্রের সমন্বয়ক এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রানীবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডঃ মনজুরুল কিবরিয়া। তিনি হালদা নদীকে চট্টগ্রামের লাইফ লাইন বলে উল্লেখ করে বলেন এই নদী বাঁচলে চট্টগ্রাম বাঁচবে। কারণ এই পানির মাধ্যমে নগরীতে বসবাসকারীদের নিত্য প্রয়োজনীয় ব্যবহার্য ও খাওয়া পানির সংস্হান হয়ে থাকে। তাই নদী রক্ষার ব্যাপারে সকলকে ঐক্য বদ্ধ হতে হবে। পৃথিবীতে সাত প্রজাতির ডলফিন রয়েছে। তৎমধ্যে হালদা, কর্ণফুলী ও সাঙ্গু নদীতে যে জাতীয় ডলফিন রয়েছে তাকে গাঙ্গেয় ডলফিন বলা হয়। ২০১৭সাল থেকে এই পর্যন্ত হালদা নদীতে ৩২টি ডলফিন মারা গেছে। তৎমধ্যে হাতে গোনা কয়েকটি মাত্র বয়সের কারণে মারা গেলে ও বেশির ভাগ মারা গেছে আঘাত জনিত কারনে। পরিবেশ বান্ধব এই ডলফিন মৃত্যুর কারণ উদঘাটনসহ মৃত্যু রোধের জন্য একযোগে কাজ করার উপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন।
বিশেষ অতিথি চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক বিপুল কৃষ্ণ দাশ বলেন, বন বিভাগ রির্জাভ ফরেষ্ট নিয়ে শুধু কাজ করেনা,প্রানীজ সম্পদ রক্ষা নিয়ে ও কাজ করে। দেশে সাম্প্রতিক সময়ে মানুষের মধ্যে বৃক্ষ রোপনের প্রবনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা দেশের জন্য একটি ভালো দিক। বৃক্ষ রোপনের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে পরিবেশ রক্ষিত হবে। তিনি পরিবেশ ও বন্যপ্রানী রক্ষার জন্য সকলের সার্বিক সহযোগীতা কামনা করেন। বিশেষ অতিথি রাউজান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম এহসানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধান মন্ত্রীর উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে প্রশাসনকে সহযোগীতার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। অনিষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিভাগীয় বন বন্যাপ্রণী ব্যাবস্থপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, আলোচক ছিলেন চবির ফরেস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক নাজমুল হোসেন।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব এর সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী মোহাম্মদ ফরিদ, হাটহাজারী প্রেস ক্লাব সভাপতি কেশব কুমার বড়ুয়া।
বন্যপ্রানী ও জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা দীপান্বিতা ভট্টাচার্য ও রাউজান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিয়াজ মোর্শেদ এর যৌথ সঞ্চালন অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোনায়েদ কবির সোহাগ, আই ডি এফ এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আধ্যাপক শহিদুল আমিন চৌধুরী, এন জি ও কর্মী শুভ্রা রানী কর, গড়দুয়ারা ইউ পির সাবেক মেম্বার মাহাবুল আলম চৌধুরী প্রমুখ। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহিদুল আলম, ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহিনুর হাসান, হাটহাজারী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)আবু রায়হান, নৌ পুলিশের ও সি এ কে এম মিজানুর রহমান খাঁন, হাটহাজারী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল আলম বাশেক। শুরুর পবিত্র কোরআন থেকে তেলোয়াত করেন ইউ পি সদস্য হাজী আবুল মনসুর।