দিঘলিয়ার বারাকপুরে সন্ত্রাসী হামলায় আলম শেখ (৫৬) নামে এক কৃষককে আহত হওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে। আহত আলম শেখ বর্তমানে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বারাকপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আলম শেখ গত ২১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার আনুমানিক ১১টার সময় বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মাসিক ভিজিডি’র চাল উত্তোলন শেষে পরিষদের বাইরে এলে পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা কতিপয় সন্ত্রাসী তাঁকে ধারালো অস্ত্র এবং হাতুড়ী দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে এবং পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে ফেলে রেখে যায়। পরবর্তীতে এলাকাবাসী তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে দিঘলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। তাঁর অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন। বর্তমানে তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহত আলম শেখ সবুর শেখের পুত্র। বাড়ি বারাকপুর ৫ নং ওয়ার্ডে। পেশায় তিনি একজন কৃষক।
আলম শেখ সদ্য সমাপ্ত ইউপি নির্বাচনে বিজয়ী চেয়ারম্যান ও আ'লীগ নেতা গাজী জাকির হোসেনের সমর্থক ছিলেন। ইউপি নির্বাচনে প্রতিপক্ষের স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ আনছার আলীর সন্ত্রাসীরা তাঁর উপর হামলা চালিয়েছে বলে দাবী করা হয়েছে বারাকপুর ইউপি চেয়ারম্যান গাজী জাকির হোসেনের।
এদিকে নির্বাচনে সতন্ত্র প্রার্থী শেখ আনছার এ হামলার দায় অস্বীকার করে এ প্রতিবেদককে জানান,ঘটনার এক সপ্তাহ আগ থেকে আমি এলাকার বাইরে। ঘটনার সময় আমি খুলনা জেলা আ'লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. সুজীত অধিকারীর কেসিসি মার্কেটের অফিসে ছিলাম। আমার কোন কর্মী সমর্থক এ ঘটনার সংগে জড়িত নয়। ঘটনা শোনার পর পরই আমি দিঘলিয়া থানায় ফোন করে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে এর সত্যতা যাচাইয়ের জন্য অনুরোধ করেছি। পরিকল্পিতভাবে ঘটনা ঘটিয়ে আমার এবং আমার কর্মী সমর্থকদের উপর দায় চাপানো হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আহত আলম বারাকপুরের একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তাঁর নামে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
দিঘলিয়া থানার ওসি (তদন্ত) রিপন কুমার জানান, এ ঘটনায় ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপরাধীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।
বারাকপুর ইউপি চেয়ারম্যান গাজী জাকির হোসেন এবং বারাকপুর বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য সমাপ্ত ইউপি নির্বাচনে সতন্ত্র প্রার্থী শেখ আনছার আলীর মধ্যে বিরোধের কারণে গত ২ বছরে উভয় গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত ৫টি মোটরসাইকেল, একটা বিদেশী পিস্তল, একটা ম্যাগজিন, ২ রাউন্ড গুলি, একটা ককটেল ও একখানা ছুরি নির্বাচনের আগে বারাকপুরের নন্দনপ্রতাপ থেকে পুলিশ উদ্ধার করে। সর্বশেষ গত ২০ সেপ্টেম্বর ইউপি নির্বাচনের দিন উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে ৭ জন আহত হয়। উভয় গ্রুপের সমর্থদের বিরুদ্ধে থানায় এবং কোর্টে একাধিক মামলা হয়েছে। দুই গ্রুপের বিরোধের কারণে ইতঃপূর্বে এলাকার শান্তি একাধিকবার বিঘিœত হয়েছে। অনেক নিরীহ লোক এখনও হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। নির্বাচনের পরও এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের জবনিকাপাত ঘটছেনা বলে এলাকাবাসী এ প্রতিবেদককে জানান। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নির্বাচন শেষ হলেও এলাকায় আধিপত্যের লড়ায় শেষ হয়নি। এখনও অনেক লোক এলাকা ছাড়া। বহিরাগতদের আনাগোনা ও মহড়া কমছেনা।
সচেতন মহল ধারণা করছেন, এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় আবারও শান্তি বিঘিœত হতে পারে।