বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের ধুরিয়াইল কাজীরপাড় গ্রামের সার্বজনীন দূর্গামন্দিরসহ তিনটি মন্দিরে হামলা চালিয়ে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় ২২ জনের নামোল্লেখসহ ৮২ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলায় শারিরিক প্রতিবন্ধী এক ব্যক্তিসহ ঢাকায় বসবাসরত একাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে মামলার বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পরলে এনিয়ে জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এজাহারে জানা গেছে, শারদীয় দূর্গা উৎসবের বিজয়া দশমীর দিন দিবাগত রাত আটটার দিকে ওই গ্রামের সার্বজনীন দূর্গামন্দিরসহ পাশ্ববর্তী পারিবারিক তিনটি মন্দিরে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে।
এ ঘটনায় গত ১৬ অক্টোবর মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুভাষ বৈদ্য বাদি হয়ে ঢাকায় বসবাসরত রফিকুল ইসলাম কাজল, ধুরিয়াইল গ্রামের মৃত মাজাহারুল ইসলামের পুত্র শারিরিক প্রতিবন্ধী (ঢাকায় বসবাসরত) রফিকুল ইসলাম শাহীন হাওলাদার, আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার এলাকার আহসান জামিল, সোহেল সিকদারসহ ৮২ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন। নামোল্লেখ করা আসামিরা সবাই বিএনপির সমর্থক।
মামলার তিন নাম্বার আসামি রফিকুল ইসলাম শাহীন জানান, আমি জন্মগতভাবে একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। আমার একটি পা ছোট। ঠিক মতো হাঁটতে পারছিনা। দীর্ঘদিন থেকে আমি পরিবার-পরিজন নিয়ে ঢাকায় বসবাস করছি। অথচ আমার বিরুদ্ধে এজাহারে অভিযোগ আনা হয়েছে, আমি মন্দিরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে তিন লাখ টাকার মালামাল লুট করেছি এবং এলাকার লোকজন ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে দৌঁড়ে পালিয়ে যাই।
গৌরনদী উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্ট্রান কল্যাণ ফ্রন্টের সভাপতি দুলাল রায় দুলু ও সাধারণ সম্পাদক মানিক মূখার্জী জানান, একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে মন্দিরে হামলা ভাঙচুর ও লুটপাটের মামলায় জড়ানো অমানবিক। প্রকৃত হামলাকারীদের আড়াল করতে এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষকে বিতর্কিত করতে কোন একটি মহলের প্ররোচনায় এ মামলাটি সাজানো হয়েছে।
মামলার বাদি ও মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুভাষ বৈদ্য বলেন, হামলার সময় আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। মামলার আসামিদের সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। এমনকি তাদের (আসামি) আমি চিনিও না। তিনি আরও বলেন, বার্থী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক হাওলাদার আমাকে থানায় নিয়ে কাগজে স্বাক্ষর গ্রহণ করেছেন। অভিযোগ অস্বীকার করে আবদুর রাজ্জাক হাওলাদার বলেন, বাদি সুভাষ বৈদ্য স্বেচ্ছায় ও স্বপ্রনোদিত হয়ে থানায় এসে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গৌরনদী মডেল থানার এসআই কেএম আবদুল হক জানান, মামলার অধিকতর তদন্তে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত হবেনা তাকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হবে।