দ্বিতীয় দফায় মেহেরপুর জেলার ৯টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে শুরু হয়েছে প্রার্থীদের প্রচার প্রচারনা। কাকডাকা ভোর থেকে গভীর রাত্রী পর্যন্ত ভোটারের দ্বারে দ্বারে ছুটে প্রার্থী ও তাদের কর্মী সমর্থকরা। দিচ্ছেন নানা উন্নয়ন সহ সেবা করার প্রতিশ্রতি।
এদিকে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে গোটা জেলায়। বেশ কয়েকটি সহিংশতার ঘটনা ঘটেছে। সহিংশতায় কয়েকজন আহত হয়েছে। নতুন করে আবারো সহিংশতার আশঙ্কা ভোটার ও প্রার্থীদের। দ্রত সময়ের মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়া না হলে যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দূর্ঘটনা।
অপরদিকে নির্বাচনী এলাকার চায়ের দোকান থেকে শুরু করে হাটবাজারে চলছে প্রার্থীদের অতিত কর্মকা- জয় পরাজয় ও নিয়ে নানা হিসেব নিকেশ। এদিকে প্রতিটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী থাকায় অনেকটাই বিপাকে পড়েছে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীরা।
তবে ভোটাররা জানিয়েছেন ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলে তারা তাদের পছন্দমত যোগ্য প্রার্থীদের ভোট দেবেন।
এদিকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মুজিবনগর উপজেলায় তেমন কোন দূর্ঘটনা না ঘটলেও গাংনী উপজেলার কয়েকটি এলাকায় পোষ্টার ছেড়া,প্রচারনায় বাধা,হামলা ভাংচুরের পাশাপাশি চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধেও মামলার ঘটনা ঘটেছে।
গাংনী উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন,কাথুলী ইউনিয়নে, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: গোলজার হোসেন (নৌকা), জেলা আওয়ামী লীগের ত্রান ও সমাজকল্যান সম্পাদক বর্তমান চেয়ারম্যান মো: মিজানুর রহমান রানা (আনারস), মো: আবুল বাসার (মটরসাইকেল), মো: সিহাব আলী (দুটি পাতা)।
তেঁতুলবাড়িয়ায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন (নৌকা),গাংনী উপজেলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ন সম্পাদক সাবেক চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা বিশ্বাস পচু (আনারস),মো: এনামুল হক ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ (হাতপাখা),গাংনী উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের সহ সভাপতি বর্তমান চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম (মোটরসাইকেল),সাবেক ছাত্রদল নেতা আমিনুল বারী মোতালেব (ঘোড়া)।
বামন্দীতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো: ওবাইদুর রহমান কমল (নৌকা),সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির যুগ্ন সাধারন সম্পাদক আবদুল আওয়াল (চশমা),গাংনী উপজেলা কৃষকলীগের সহ সভাপতি আজিজুল হক (আনারস),মেহেদী হাসান (মোটরসাইকেল)।
মটমুড়ায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: আবুল হাসেম বিশ্বাস (নৌকা),বর্তমান চেয়ারম্যান ও গাংনী উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগের সাধারন সম্পাদক সোহেল আহমেদ (আনারস), আবদুস সালাম জাতীয় পার্টি (নাঙ্গল)।
সাহারবাটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মো: মশিউর রহমান (নৌকা),বিএনপি নেতা বাশিরুল আজিজ হাসান(চশমা),জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি মো: রাকিবুল ইসলাম টুটুল (মটরসাইকেল), জাতীয় পার্টির বাবলু হোসেন (নাঙ্গল), ও ছানারুল ইসলাম ছানা (আনারস)।
মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ানে, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক কুতুবউদ্দীন মল্লিক (নৌকা), জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বর্তমান চেয়ারম্যান আয়ূব হোসেন (আনারস)।
মোনাখালীতে,ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফা (নৌকা),স্বতন্ত্র বর্তমান চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান মফিজ (ঘোড়া) সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম (আনারস) ও মাহাবুবুর রহমান (মোটরসাইকেল)।
দারিয়াপুরে, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মুস্তাকিম হক খোকন (নৌকা) বর্তমান চেয়ারম্যান তৌফিকুল বারী বকুল (অটোরিক্সা),আবুল কাশেম (মোটরসাইকেল), মঞ্জরুল হক (চশমা) মোয়াজ্জেম হোসেন (আনারস)।
মহাজনপুরে,ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউর রহমান নান্নু (নৌকা) স্বতন্ত্র প্রার্থী মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক বর্তমান চেয়ারম্যান আমাম হোসেন মিলু (আনারস) ,তোফাজ্জেল হোসেন (মোটর সাইকেল) ও শেখ মিসকিন পেয়েছেন (ঘোড়া)।
মোহাম্মদপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম জানান, নির্বাচন নিয়ে যেভাবে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে যে কোন সময় বড় ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে। সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ন পরিবেশ থাকলে তারা তাদের পছন্দ মত প্রার্থীদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন।
মহাজনপুর গ্রামের বৃদ্ধা রোকেলা খাতুন বলেন,ভোট আসলে প্রার্থীরা খোঁজ খবর নেন। ভোট মিটে গেলে আর তাদের দেখা মেলেনা। তাই এবার ভেবে চিন্তে ভোট প্রধান করবেন বলে জানান তিনি।
গাড়াবাড়িয়া গ্রামের হাফিজুল ইসলাম বলেন,কাথুলী ইউনিয়ন ভারতীয় সীমান্ত এলাকা জুড়ে। ইতোপূর্বে এ ইউনিয়নের ধলা গ্রামে ট্রিপল মার্ডারের মত ঘটনাও ঘটেছে। তাই সীমান্ত ইউনিয়নে শান্তিপূর্ন ভাবে ভোট গ্রহন করতে হলে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে হবে।
তবে কয়েকজন চেয়ারম্যান প্রার্থী বলেন, এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ন পরিবেশ রয়েছে। দুএকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। প্রার্থীরা আন্তরিক হলে শান্তিপূর্ন নির্বাচন করা সম্ভব হবে।
জেলা নির্বচন কর্মকর্তা আবু আনসার জানান,নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ন নির্বাচন আয়োজনের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) অপু সারোয়ার বলেন, যার ভোট সে দেবে যাকে খুশি তাকে দেবে। পুলিশের কাজ এলাকার শান্তিশৃংখলা রক্ষা করা। তিনি আরো বলেন এক প্রার্থীর পক্ষ নিয়ে অপর প্রার্থীর লোজনের সাথে মারামারি করবেন আপনাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে।