আগামী ১১নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে পাবনার সুজানগরের ১০ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। আসন্ন ঐ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন দল মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। বিশেষ করে বিদ্রোহের আগুনে জ¦লছে উপজেলার মানিকহাট, দুলাই, সাতবাড়ীয়া, হাটখালী ও আহম্মদপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা।
উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আজিজুর রহমান জানায়, আসন্ন ঐ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে উপজেলার ১০ ইউনিয়ন থেকে ৭২জন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের কাছে আবেদন করেন। এদের মধ্যে অন্তত ২০জন উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রথম শ্রেণির নেতা এবং অন্যরা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের সংগঠক। এর মধ্যে ওই মনোনয়ন বোর্ড উপজেলার তাঁতীবন্দ ইউনিয়নে মোঃ আবদুল মতিন মৃধা, দুলাই ইউনিয়নে মোঃ সিরাজুল শাহজাহান, আহম্মদপুর ইউনিয়নে মোঃ কামাল হোসেন, রানীনগর ইউনিয়নে জিএম তৌফিকুল আলম পিযূষ, সাগরকান্দী ইউনিয়নে মোঃ শাহীন চৌধুরী, নাজিরগঞ্জ ইউনিয়নে মশিউর রহমান খান, সাতবাড়ীয়া ইউনিয়নে বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম শামছুল আলম, ভায়না ইউনিয়নে মোঃ আমিন উদ্দিন, মানিকহাট ইউনিয়নে মোঃ শফিউল ইসলাম ও হাটখালী ইউনিয়নে মোঃ আবদুর রউফকে দলীয় মনোনয়ন প্রদান করেন। দলীয় মনোনয়ন থেকে যারা বঞ্চিত হন তাদের মধ্যে ১০ইউনিয়নে ২০জন বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তবে আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র জানায়, ১০ইউনিয়নের মধ্যে মানিকহাট ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্বাস আলী মল্লিক, হাটখালী ইউনিয়নে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য আজাহার আলী শেখ, সাতবাড়ীয়া ইউনিয়নে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন, দুলাই ইউনিয়নে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমান সাইদ ও আহম্মদপুর ইউনিয়নে আ.লীগ নেতা হিরা মিয়াকে নিয়ে দল মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বেকায়দায় পড়েছেন। ঐ সকল ইউনিয়নে দলীয় প্রার্থীদের পাশাপাশি বিদ্রোহী প্রার্থীরাও বেশ জনপ্রিয়, তথা আওয়ামী লীগের ত্যাগি নেতা। ফলে দলীয় নেতা-কর্মীরা বিদ্রোহী এবং দলীয় প্রার্থীর পক্ষে বিভক্ত হয়ে প্রকাশ্যে নির্বাচনী মাঠে অবস্থান নিয়েছেন। তাছাড়া সাধারণ ভোটাররাও ভিতরে ভিতরে বিদ্রোহী প্রার্থীদের সমর্থন জানাচ্ছেন। এতে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীদের জয়লাভ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে কোথাও কোথাও দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী এবং বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটছে। নির্বাচনের দিন যত এগিয়ে আসছে অপ্রীতিকর ঘটনা আরও বেশি ঘটার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে এলাকার সচেতন মহল মনে করছেন। এদিকে বিদ্রোহী প্রার্থীদের অভিযোগ দলীয় প্রার্থীদের সমর্থকরা তাদের সমর্থকদের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় বাঁধা সৃষ্টি করছেন। এমনকি নানাভাবে ভয়ভীতিও প্রদর্শন করছে। তবে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ঐ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন বিদ্রোহী প্রার্থীরা নির্বাচনী মাঠে বাড়তি সুবিধা নেওয়ার জন্য উদ্দেশ্য প্রণোদিত অভিযোগ করছেন। কেউ তাদের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় বাঁধা দিচ্ছেনা এমনকি ভয়ভীতিও প্রদর্শন করছেনা। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফাতেমা খাতুন বলেন এখন পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে বড় ধরনের কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। কোন প্রার্থী নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটালে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।