যশোরের ঝিকরগাছায় কারেন্ট পোকার আক্রমনে আমন ধান চাষীদের স্বপ্নভঙ্গ হতে বসেছে। ভুক্তভোগী কৃষকদের অভিযোগ, মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাগণের কৃষকদের ভালোমন্দের খোঁজ নেয়ারও সময় নেই।
ঝিকরগাছা উপজেলায় আমন ধানের এ মৌসুমে প্রায় ১৮ হাজার ১শ' ৩৫ হেক্টর জমিতে ধান উৎপাদনের কাজে নিয়োজিত কৃষকসমাজ। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬৮ হাজার ৯শ' ১৩ মেট্রিক টন।
চলতি মৌসুমে ঝিকরগাছার আমন ধান চাষির স্বপ্নভঙ্গ হতে বসেছে। কারেন্ট পোকার আক্রমণে আমন ধান গোলায় তুলতে পারবেনা বলে আশঙ্কা তাদের। তবে এসব খবর জানেন না উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ। তারা মাঠ তদারকিতে না থাকায় কৃষকেরা ধানের ক্ষেত কারেন্ট পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারছেন না।
উপজেলার নাভারণ ইউনিয়নের কলাগাছি মাঠে হাড়িয়া নিমতলার গ্রামের ইউনুস আলীর একবিঘা ধান ক্ষেত কারেন্ট পোকার আক্রমণে একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। কলাগাছি গ্রামের বর্গাচাষি নজরুল ইসলাম বাবু বলেন, এখানকার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা দু'একজনের সাথে যোগাযোগ রাখেন, গরীব কৃষকদের তিনি চেনেন না। একই গ্রামের রহমত আলী বলেন, আমাদের এদিকে কোনো সময় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আসেন না। নওয়ালী গ্রামের কৃষক হায়দার আলী বলেন, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা না আসায় কীটনাশক বিক্রেতারাই আমাদের ভরসা। তাঁরা যা বলেন আমরা তাই করি।
উপজেলার খরুসা গ্রামের কৃষক মতিয়ার রহমান বলেন, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা এলাকায় আসেন না। তাই একাধিকবার লিখিত অভিযোগ করেছি কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।
নাভারণ ইউনিয়নে দায়িত্বে থাকা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মফিজুর রহমান বলেন, সব গ্রামে সব কৃষকের কাছে যাওয়া তো সম্ভব না। তাই যে কৃষক মোবাইল ফোনে ডাকেন তাঁর কাছে যাওয়া হয় এবং পরামর্শ দেয়া হয়।
উপজেলা উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণকারী কর্মকর্তা মফিজুর রহমান বলেন, আমন ধানে কারেন্ট পোকার আক্রমণের খবর পেলে সেখানে যাওয়া এবং প্রতিকারের জন্য কৃষককে ওষুধ ছিটাতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন - কারেন্ট পোকার আক্রমনে ক্ষতিগ্রস্থ খুবই সামান্য, এরফলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিরুপ প্রভাব পড়বে না। তবে পোকার আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের প্রণোদনা দেয়া হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যশোর অঞ্চলের উপপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, এ সময় আসলে আমন ধানে কারেন্ট পোকার আক্রমণ হয়। সে কারণে কৃষক ও কৃষক গ্রুপের সাথে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের যোগাযোগ রেখে প্রতিকারের জন্য পরামর্শ দেয়ার নির্দেশ রয়েছে।