বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস দীর্ঘদিনেও জ্বালানি তেলের দাম পরিশোধ করছে না। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) আওতাধীন কোম্পানি পদ্মা অয়েলের জ্বালানি তেলের বকেয়া বিল পরিশোধ করছে না। এমনকি বিভিন্ন সভায় বকেয়া টাকা দিতে বিমানের প্রতিনিধিরা অনীহা প্রকাশ করে। মূলত ২০১১ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত বিমান জ্বালানি তেলের বিল পরিশোধ করেনি বললেই চলে। পদ্মা অয়েল এবং বিপিসি বিমানের সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা করেছে। কিন্তু পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় মন্ত্রণালয় পর্যায়েও বৈঠক হয়। পরে ২০১৯ সালের অক্টোবর পর্যন্ত পুঞ্জীভূত বকেয়া ধাপে ধাপে পরিশোধ করা এবং ২০১৯ সালের নভেম্বর থেকে নিয়মিত বিল পরিশোধের জন্য বিমানকে বলা হয়। বিপিসি সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশে অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক রুটে চলাচলকারী উড়োজাহাজগুলো সাধারণত ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থাকা পদ্মা অয়েলের ডিপো থেকে জ্বালানি তেল জেট ফুয়েল নেয়। ওই ডিপো থেকে জেট ফুয়েল নেয় দৈনিক ৫০ থেকে ৬০টি এয়ারলাইনস কোম্পানির উড়োজাহাজ। বিমান বাদে অন্য সব উড়োজাহাজ অগ্রিম টাকা পরিশোধ করে তেল নেয়। কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হিসেবে বিমানকে এ ব্যাপারে ছাড় দেয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘদিনেও বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় বিপাকে পদ্মা অয়েল। আর বকেয়ার বিষয়ে দুই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিভিন্ন সময় আলোচনা করেছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠকও হয়েছে। নিয়মিত বিরতিতে চিঠি চালাচালিও চলছে। তারপরও দেনা পরিশোধ করছে না বিমান।
সূত্র জানায়, এক সময় বিমানের আর্থিক সংকট বেশ প্রকট ছিল। তখনই জ্বালানি তেলের বকেয়ার পরিমাণ বেড়ে যায়। তারপর থেকে নিয়মিত অর্থ পরিশোধের পাশাপাশি আগের বকেয়াও পরিশোধ করা শুরু হয়েছে। তবে এখনো পদ্মা ফুয়েলের বিপুল পরিমাণ টাকা শোধ করেনি বিমান।
এদিকে এ প্রসঙ্গে পদ্মা অয়েল কোম্পানির উপ-মহাব্যবস্থাপক (অ্যাভিয়েশন) মো. মাহবুবুল আলম জানান, অন্য পরিচালন ব্যয় মিটিয়ে জ্বালানি তেল কেনা বাবদ অর্থ পরিশোধে টাকা থাকে না বলে জানিয়েছে বিমান। আর দীর্ঘদিন ধরে এ বকেয়া জমে তা বড় আকার ধারণ করেছে।
অন্যদিকে বিপিসির চেয়ারম্যান জানান, আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে বিমানের বকেয়া পরিশোধের কথা । কিন্তু তারা মাত্র ২০ কোটি টাকা পরিশোধ করে একেবারে স্থবির হয়ে পড়েছে। বিষয়টি গতিশীল করা প্রয়োজন।