বগুড়ার গাবতলীতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কর্তৃক ৫ম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে প্রাইভিট পড়ার সময় যৌন হয়রানীর অভিযোগের সত্যতা মিলেছে তদন্ত কমিটিতে। বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানালেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। জানাগেছে, গাবতলী উপজেলার নেপালতলী ইউনিয়নের শালুকগাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতিদিন সকাল বেলা অনিয়মতান্ত্রিকভাবে অত্র স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম প্রাইভিট পড়াতেন।
ঘটনার দিন চলতি ২০২১ সালের অক্টোবর মাসের ২৫ তারিখে পুর্বেরন্যায় স্কুল কক্ষে কয়েকজন ছাত্রীকে নিয়ে প্রাইভিট পড়ানো শেষে ২ জন ছাত্রীকে রেখে অন্যদেরকে ক্লাস রুমে চলেযেতে বলেন। দু’জনের মধ্য এক জনকে পাশের বাড়ি থেকে মসলা (আদা) আনতে পাঠিয়েদেন ওই শিক্ষক। এ সুযোগে ৫ম শ্রেনীর জনৈক ওই ছাত্রীকে প্রধান শিক্ষক শারিরিকভাবে যৌন হয়রানী করে।
ওই ছাত্রী স্কুল কক্ষথেকে দৌড়ে বাড়িতে গিয়ে তার দাদীকে গিয়ে বিষয়টি খুলে বলে। এরমধ্য ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে স্থানীয় অভিভাবক ও জনগন একত্রিত হয়ে স্কুল ঘেড়াও করে প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম (৪৫) অবরুদ্ধ করে ফেলে। সংবাদ পেয়ে গাবতলী উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার বুলবুল আহম্মেদ ঘটনারস্থলে গিয়ে প্রথমে পরিস্থিনি নিয়ন্ত্রনে আনতে ব্যার্থ হয়। পরে স্থানীয় অভিভাবক ও জনগনের মাঝে ঘোষনা দেন, শিক্ষক আমিনুল ইসলামকে সাময়িকভাবে স্কুলের সকল কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি ও তদন্ত করে শাস্তি মুলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ঘোষনার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়। শালুকগাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে অনিত যৌন হয়রানীর অভিযোগ অস্বীকার করেন ও ষড়যন্ত্র বলে দাবী করেন।
পিতা-মাতাহিন ওই ছাত্রী দাদী কাছে লালন পালন হচ্ছেন। ঘটনার দিইেন দাদী মোছাঃ ছালেহা বেগম বাদী হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে নাতিকে যৌন হয়রানীর অভিযোগ আনেন, প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ রওনক জাহান সুষ্ঠতদন্ত’র জন্য উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ রাসেদুল ইসলামকে আহবায়ক, উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা জান্নাতুল মাওয়া ও উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার আব্দুর রাজ্জাককে সদস্য করে ৩ সদস্য’র একটি তদন্ত কমিটি করেদেন।
তদন্ত কমিটি কয়েকদিন, গোপনে প্রকাশ্যে তদন্ত করে, এবং প্রাইভিট পড়ার সময় যে ছাত্রী যৌন হয়রানীর স্বীকার হয়েছে তার সহপাঠি আরো ২ ছাত্রীর সাক্ষ ও লিখিত বক্তব্য গ্রহন করে। প্রধান শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রীকে যৌন হয়ানীর বিষয়টি তদন্ত কমিটি সত্যতা পেয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে জমা দিয়েছে তদন্ত কমিটি।
এব্যপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ রওনক জাহানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, শালুকগাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আমিনুল ইসলাম কর্তৃক ওই স্কুলের ৫ম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি মর্মে তদন্ত রিপোর্ট দিয়েছে। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলামকে বিদ্যালয়ের সকল কর্মকান্ড থেকে সাময়িকভাবে অব্যহতি প্রদান করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সুপারিশ করে জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।