ব্র্যাকের উচ্চ ফলনশীল ধান বীজ কিনে প্রতারণার শিকার হয়েছে পাবনার আটঘরিয়ার শতাধিক কৃষক। নিম্নমানের বীজের কারণে বিঘা প্রতি ফলন হচ্ছে ৪ থেকে ৫ মণ। এ অবস্থায় উৎপাদন খরচ তোলা নিয়ে দিশেহারা কৃষকরা। এ দায় নিতে নারাজ ব্র্যাক। কৃষি বিভাগ বলছে, চাষিদের লোকশান পুষিয়ে নেতে কাজ করছেন তারা।
পাবনার আটঘরিয়ার সন্জয়পুর গ্রামের কৃষক জমসের আলী। ব্র্যাকের উচ্চ ফলনশীল জাতের হাইব্রিড-১০ ধানের বীজ কিনে এক বিঘা জমিতে চাষ করেছে তিনি কিন্তু ধানের ফলন হয়েছে বিঘায় ৪ থেকে ৫ মণ। শুধু জমসের আলীই নয় তার মতো কয়েকশত কৃষক এই বীজ কিনে প্রতারিত হয়েছেন।
জমসেদ আলী বলেন, ব্য্যাক থেকে দুই কেজি ধান বীজ কিনে তাদের কথায় চাষ করেছিলাম। খরচ হয়েছে ১০ হাজার টাকা। ৫ হাজার টাকা সারের দোকানে বাঁকি আছে। ধান হয়েছে ৫মণ। এখন আমি খাবই না দোকানের বাঁকি দিব।
সনাজয়পুর ক্লাব পাড়া দিলবার হোসেন বলেন, ব্র্য্যাক বলেছিলো প্রতি বিঘায় ২৫ থেকে ৩০ মণ ধান হবে। এক কেজি ধান বীজ কিনে রোপন করেছি ধান হয়েছে বিঘায় ৩ থেকে ৪ মণ। এখন খাব না দোকানের বাঁকি দিন।
ইসমাঈল আজম বলেন, আমাদের দেশীও ধান থেকে ৮০ থেকে ৮৫ ভাগ এই ধানে রোগ বালাই বেশী এই ব্র্যাকের বীজে। আর আগাছার কারণে ধানে চিটা হয়ে গেছে। এখন আমরা কার কাছে যাব ।
সিফাতের ঢালু এলাকার রওশন আলী বলেন, আমরা কৃষি অফিসারের কাছে অভিযোগ করেছি তারাও কোন কিছু বলেনি। এখন ব্র্যাকে য ক্ষতি করেছে তার প্রতিকার চাই।
এসব কৃষকদের কাছে প্রতি বিঘায় ৩০ থেকে ৩৫ মণ ফলনের লোভ দেখিয়ে এই ধানের বীজ বিক্রি করেছে ব্র্যাক। তাদের মধ্যে অনেক কৃষক কোন ধান গোলায় তুলতে পারেননি। নিম্নমানের বীজের কারণে ধান ক্ষেতে অতিরিক্ত আগাছা ও পোকার আক্রমণের কারণে জমির ধান চিটা হয়েছে বলে দাবী কৃষকদের।
এদিকে ব্র্যাক অফিস ঘিরে মঙ্গলবার বিক্ষোভ করেছেন কৃষকরা। এ বিষয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি ব্র্যাক আটঘরিয়া শাখার ফার্ম, ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ।
আটঘরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার সজীব আল মারুফ বলেন, ব্র্যাক ধান চাষ করেছে। কৃষকরা আমাদের কাছে অভিযোগ করায় মাঠ পরিদর্শন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, মাঠে গিয়ে দেখা যায় জমিতে বিজাত ধান ও ধানে ব্যাপক চিটা হওয়ায় কৃষরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে চাষিরা। তাদের উৎপাদন খরই উঠবে না। তবে ব্র্যাক কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে সময় চেয়েছে।
তিনি আরো বলেন, কৃষকদের সাথে আমরা সব সময়ই আছি। কিভাবে তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যায় সে বিষয়ে আমরা কাজ করছি।
পাবনা জেলায় এবার ৫৫ হাজার ৯৮৮ হেক্টর জমিতে রোপা-আমন ধানের চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৬১ হাজার ২১৪ মে: টন।