ভোলাহাটে বরই বাগানে ফল না আসায় হতাশ বরই চাষিরা। আয় না পাওয়ার আশায় বাগান কেটে ফেলে অন্য ফসল চাষে ঝুকছেন চাষিরা। বিভিন্ন জাতের বরই গাছে ফুল আসলেও ফল আসেনি। এতে করে বরই চাষ করা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন স্থানীয় চাষিরা। বরই গাছে ফল না আসায় তাঁদের মাঝে চরম হতাশা বিরাজ করছে। এতে আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন চাষিরা। গাছে গাছে ফুলে ভরে গেলেও ফল নেই। ফলে হতাশায় বরই গাছ কেটে অন্য ফসল করতে শুরু করেছেন তাঁরা।
অনেকে শিক্ষিত বেকার যুবক মৌসুমি ফসল হিসেবে বরই চাষ করে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করছিলেন। স্বপ্ন দেখেছিলেন বেকারত্বের যন্ত্রনা থেকে মুক্ত হতে। সেই স্বপ্নের ওপর ভর করেই বিভিন্ন এনজিও সংস্থার কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে রবই চাষ শুরু করেন। বাগানের গাছগুলো ফুলে ভরে ওঠে। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে ফল না ধরাতে লাখ লাখ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে নিজের গড়া বাগানের গাছ কেটে ফেলছেন চাষিরা। ভোলাহাট উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ১শ ৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের বরই চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ৫ মে. টনের বেশি বরই উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।তবে স্থানীয় বরই চাষিরা বলছেন, কৃষি দপ্তরের হিসাব ঠিক নেই। ৪/৫’শ হেক্টর জমিতে বরই চাষ হয়েছে।
বরই চাষি মোঃ নুর আলম বলেন, বছরের এই সময় বাগানে বরই থাকার কথা থাকলেও এবার বৈরী আবহাওয়ার কারণে গাছে ফলনই আসেনি। সারাবছর বাগান পরিচর্যা, সার ও কীটনাশক প্রয়োগের পরও ফলন না আসায় হতাশ হয়ে পড়েছি। বিপুল অংকের টাকা বিভিন্ন এনজিও সংস্থার কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করে ফলন না পাওয়ায় চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছি।
বরই চাষী মোঃ রবিউল ইসলাম জানান,এনজিও থেকে ঋণ করে পাঁচ বিঘা জমি লীজ নিয়ে বরই চাষ করেছি। এখন ফল না আসায় হতাশ হয়ে গাছ কেটে ফেলে অন্য ফসল উৎপাদনের চিন্তা করছি। তিনি বলেন, প্রায় দেড় লাখ টাকা খরচ করেছি। গাছে ফল আসলে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা আয় পাওয়ার আশা ছিল। এখন এক টাকাও পাওয়ার আশা নাই। এনজিও সংস্থার ঋণের টাকা কি ভাবে শোধ করা যায় এ নিয়ে চিন্তিত আছেন বলে জানান।
পোল্লাডাঙ্গা লম্বাটোলা গ্রামের মোঃ মজিবুর রহমান জানান, গত বছর বাগানে নিয়মিত সার, কীটনাশক প্রয়োগ করে বরইয়ের দাম না পাওয়া এ এবার ফল না আসাতে গাছ কেটে ফেলে দিচ্ছি। সরিষা আবাদ করার কথা ভাবছেন বলে জানান তিনি।ফুল আসলেও ফল না আসার কারণ কি কৃষিবিদ মোঃআবুল কাশেম জানান, রাতে ঠান্ডা দিনে গরম এমন আবহাওয়ার কারণে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করেন তিনি।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ সাগর আলী জানান, পরিবর্তিত আবহাওয়ায় ভোলাহাট উপজেলায় বরই ফলের দানা গঠনে জাত ভিত্তিতে ভিন্নতা দেখা গেছে। সুন্দরী জাতের বরই সমস্যা দেখা দিলেও অন্য জাতের বরই সমস্যা দেখা যায়নি বলে জানান।