নাসিরনগর উপজেলায় আগামী বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে ১৩টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ,জাতীয় পার্টি (এরশাদ),ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ,জাকের পাটি ও স্বতন্ত্রসহ চেয়ারম্যান পদে ৬০ জন, সংরক্ষিত মহিলা আসনে ১৬৫ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৪৯৬ জন প্রার্থী ইউপি নির্বাচনের জয়ের মালার লোভে ঘুম,নাওয়া-খাওয়া প্রায় বন্ধ। নিবার্চনী আলোচনায় সরগরম হয়ে উঠেছে মাঠ ঘাট প্রান্তর। কাকডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা। আগামী বৃহস্পতিবার নাসিরনগরবাসীর ভোট উৎসব। তাই শেষ মুর্হুতে চলছে প্রার্থীদের নিয়ে নানা হিসাব-নিকাশ। চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চেয়ে না পেয়ে এমন ৭টি ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থীসহ আওয়ামী লীগ, জাপা,ইসলামী আন্দোলন,জাকের পার্টি মনোনিত প্রার্থী ও স্বতন্ত্র ৬০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ১৩ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন উপজেলার ১ নম্বর চাতলপাড় ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামলীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান শেখ আবদুল আহাদ। বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন মীর হোসেন ও রফিকুল ইসলাম। ২ নম্বর ভলাকুট ইউনিয়নে মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান রুবেল মিয়া। বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন মো. শাহআলম ও মো. আরাফাত আলী। ৩নং গোয়ালনগরে ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান ডাঃ মোঃ কিরণ মিয়া,বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আজহারুল হক চৌধুরী ও মো. কাপ্তান মিয়া। ৪ নম্বর কুন্ডা ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন মোঃ ওয়াছ আলী। ৫ নম্বর নাসিরনগর সদর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য পুতুল রানী দাস, বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আবদুল আহাদ, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রফিজ মিয়া ও আওয়ামী লীগ নেতা মুখলেছুর রহমান ভূইয়া। ৬ নম্বর বুড়িশ্বর ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান এটিএম মোজাম্মেল হক সরকার। ৭ নম্বর ফান্দাউক ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন সদ্য পদত্যাগী জেলা পরিষদ সদস্য সাবেক চেয়ারম্যান হাজ¦ী ফারুকুজ্জামান ফারুক। ৮ নম্বর গুনিয়াউক ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ জিতু মিয়া ,বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন সৈয়দ মুস্তাক আহমেদ দিপু। ৯নং চাপরতলা ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মনসুর আলী ভূইয়া,বিদ্রোহী হয়েছেন মো. আবদুল হামিদ ও কামরুজ্জামান। ১০নং গোর্কণ ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ছোয়াব আহমেদ হৃতুল। ১১ নম্বর পূর্বভাগ ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন মোঃ আক্তার মিয়া। ১২ নম্বর হরিপুর ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন ওয়াসিম আহমেদঁ, বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ফারুক মিয়া। ধরমন্ডল ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান বাহার উদ্দিন চৌধুরী। আওয়ামী লীগের মধ্যে একাধিক প্রার্থী থাকায় সাধারণ কর্মী-সমর্থকেরা দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়ছেন।
চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী থাকার সুযোগ কাজে লাগাতে বিএনপি দলীয়ভাবে নিবার্চনে অংশগ্রহণ না করলেও বিএনপি‘র কতিপয় নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তারা হলেন -নাসিরনগর সদর ইউনিয়ন থেকে উপজেলা জাসাসের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসানুর রহমান,বুড়িশ্বর ইউনিয়ন থেকে মো. ইকবাল চৌধুরী(উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি),কুন্ডা ইউনিয়ন থেকে ওমরাহ খান(উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি),এডভোকেট নাসিরউদ্দিন ভূইয়া (বিএনপি নেতা),গোকর্ণ ইউনিয়ন থেকে সাবেক চেয়ারম্যান এম এ হান্নান (উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক),সৈয়দ মোহাম্মদ শাহিন (বিএনপি নেতা),সামসুল আরেফিন(যুবদল নেতা),ফান্দাউক ইউনিয়ন থেকে মো.সার্জেন্ট সফিকুল ইসলাম(ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক)পূর্বভাগ ইউনিয়ন থেকে সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন (উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি),হরিপুর ইউনিয়ন থেকে সাবেক চেয়ারম্যান মো. জামাল মিয়া (উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি), গুনিয়াউক ইউনিয়ন থেকে অ্যাডভোকেট মো. সামছুল হক লিটন (উপজেলা বিএনপির সদস্য),চাপরতলা ইউনিয়ন থেকে বর্তমান চেয়ারম্যান ফযেজ উদ্দিন ভূইয়া (উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি) ও ভলাকুট ইউনিয়ন থেকে মোজাম্মেল হক (উপজেলা বিএনপির কর্মী) ও ধরমন্ডল ইউনিয়ন থেকে সফিকুল ইসলাম (ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক)। তবে কোন কোন ইউনিয়নে বিএনপি‘র একাধিক নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।
এছাড়াও আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর পাশাপাশি মনোনয়পত্র জমা দিয়েছেন জাতীয় পার্টি(এরশাদ), ইসলামি আন্দোলনের প্রার্থী ও জাকের পার্টিও।
বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ডাঃ রাফিউদ্দিন আহমেদ বলেন,দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন তাদের মধ্যে যাদের দলীয় পদবী রয়েছে এমন জনকে প্রার্থীকে দল থেকে অব্যাহতিসহ বহিস্কারের সুপারিশ করা হয়েছে।
নাসিরনগর উপজেলায় ১২৫টি কেন্দ্রে ও ৬শ’ ৩১টি বুথে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। নতুন ভোটার তালিকা অনুযায়ী ১৩টি ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ২৬ হাজার ১১৩ জন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নিবার্চন সমন্বয়কারী হালিমা খাতুন জানান,অবাধ, সুষ্ঠু,শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নিবার্চন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি ইউনিয়নে ঝুঁিকপূর্ণ কেন্দ্র চিহ্নিত করে সেখানে নেয়া হচ্ছে বাড়তি নিরাপত্তা।