আগামীকাল বৃহস্পতিবার ১১ নভেম্বর যশোরের ঝিকরগাছায় ইউপি নির্বাচন। উপজেলা চেয়ারম্যানের নির্বাচন আচারণ বিধি বহির্ভূত বক্তব্যে উপজেলার ১১ ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং ভোটারগন আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
উপজেলা যুবলীগের সদস্য ও ঝিকরগাছা সদর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. বারিক লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম ঘোষণা দিয়েছেন, ‘নৌকা মার্কায় যারা ভোট দেবেন না, তারা যেন সেদিন ভোটকেন্দ্রে না আসেন।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী ৭ নভেম্বর নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে এবং তার পক্ষের নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা চেয়ে যশোরের জেলা প্রশাসক বরাবর একটি আবেদনপত্রও জমা দিয়েছেন। সাথে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বক্তব্যের ১২ মিনিট ৫৯ সেকেন্ডের একটি অডিও ক্লিপও জমা দিয়েছেন।
আবেদনে মো. বারিক উল্লেখ করেছেন, তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীক নিয়ে ঝিকরগাছা সদর ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গত ৫ নভেম্বর বিকালে ঝিকরগাছা সদর ইউনিয়নের লাউজানি স্কুল মাঠে নির্বাচনি জনসভায় বক্তারা প্রকাশ্যে ঘোষণা দেন- ‘কেউ নৌকা মার্কায় ভোট না দিলে তাদের ভোটের মাঠে আসার প্রয়োজন নেই। আর যদি কেউ আসে, তাহলে প্রকাশ্যে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে হবে।’
ওই অডিও ক্লিপে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলামের বক্তব্যের সারমর্ম হলো-১১ নভেম্বর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী আমির হোসেনকে ভোট দিতে হবে। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. বারিককে উদ্দেশ্য করে বলেছেন- তিনি যেন খুব শিগগির সাংবাদিক সম্মেলন করে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন এবং নৌকার প্রার্থীকে সমর্থন দেন। ১১ তারিখের পর আর তাকে নৌকায় নেওয়া হবে না।
বক্তব্যের একপর্যায়ে মনিরুল বলেন, বারিকের পেছনে স্থানীয় একজন বিএনপি নেতা ও একজন জামায়াত নেতার ইন্ধন রয়েছে।
তিনি নিজ দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা সবাই জামায়াত-বিএনপি নেতাদের বাড়িঘর চেনেন। সবাই তাদের বাড়ি বাড়ি যাবেন, তাদের মিষ্টি করে বলবেন- ভোটের দিন মাঠে আসার দরকার নেই। তাদের বলবেন, ওইদিন আপনারা বাড়িতেই অবস্থান করবেন, না হলে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে চলে যাবেন। সেখানে গিয়ে মুরগির মাংস খাবেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম বিএনপি-জামায়াত নেতাদের উদ্দেশে বলেন, আমরা অশান্তি চাই না। আপনারা যদি অশান্তি সৃষ্টি করেন, তাহলে এই যে এখন আপনারা ভালোভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, ব্যবসা বাণিজ্য করছেন- সেগুলোতে সমস্যা হবে।
তবে উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলামের দাবি, এটি তার বক্তব্য নয়। তিনি বলেন, আমি এ ধরনের বক্তব্য দিইনি। আমার বক্তব্য টেম্পারিং করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার দুপুরে ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহবুবুল হক জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসক স্যারের কাছে এমন একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে বলে শুনেছি। ডিসি স্যার আমাকে অথবা নির্বাচন অফিসারকে নির্দেশনা দিতে পারেন। স্যারের নির্দেশনা পাইলে, সে মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
যশোরের জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অনেক জায়গা থেকে কম-বেশি অভিযোগ আমার কাছে আসছে। প্রতিটি অভিযোগ আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।