শ্বামী মৃত্যুর তিনমাস পার না হতেই নানা ফাঁদ এঁটেছে সোমা বেগম (৩০) এর শ্বশুর বাড়ির লোকজন। অর্থ আত্মসাৎ, সম্পতি দখল করতে দেয়া হয় বিয়ের প্রস্তাব। তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় পূর্বপরিকল্পিত ভাবে ভোররাতেই শ্বশুড় বাড়ির লোকজন ধারালো অস্ত্র নিয়ে সোমা বেগমের ঘরে হামলা চালায়। কুপিয়ে জখম করা হয় বিধবা গৃহবধূ সোমা বেগম, তার ১৩ বছরের ছেলেকে। তবে ভুক্তভোগিদের আত্মচিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে চাচা শ্বশুড়-শ্বাশুড়ি ও দেবররা তার ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। চরম নিষ্ঠুরতার শিকার হয়ে দুইদিন থেকে ছেলে পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা চলছে। আর ওই গৃহবধূ রামেক হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। আর ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার (৮ নভেম্বর) ভোর ৬টায় রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার মহনপুর গ্রামে।
গৃহবধূ সোমা বেগম ওই গ্রামের মৃত মনিরুল ইসলামের স্ত্রী। তিনি ১৩ বছরের এক ছেলে ও এক বছরের এক মেয়েকে নিয়ে শ্বামির বাড়িতেই বসবাস করেন।
ভালুকগাছি ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড সদস্য মাসুদুল হাসান মিলন বলেন, মনিরুল ইসলাম পরিবারে একমাত্র ছেলে ছিল। তিনিও গত তিনমাস আগে মারা গেছেন। তার মৃত্যুর পর স্ত্রী সোমা বেগম দুই ছেলে মেয়ে নিয়ে বাড়িতে একাই থাকেন। শ্বাশুড়ি থাকেন মেয়ের বাড়িতে। তবে ওই গৃহবধু কিছুদিন আগে জানিয়েছিলেন স্বামি মৃত্যুর পর তাদের নগদ টাকা পয়সা তার চাচা শ্বশুড় সাইফুল ইসলামের কাছে জমা ছিল। সম্প্রতি ওই গৃহবধূর টাকার প্রয়োজন পড়ে। সেই টাকা নিয়ে কিছু জটিলতা আছে। সে সূত্রে সোমবার ভোররাতে চাচা শ্বশুড় সাইফুল ও তার পরিবারের লোকজন মিলে ওই গৃহবধু ও তার ছেলে মারধর ও জখম করছে। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে এ ঘটনার পর বিষয়টি আপোশ করার চেষ্টা করছেন বলে শুনেছি।
ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূর ছেলে সিয়াম বলেন, আমার বড় দাদার তিন ছেলে আছেন। তারা হচ্ছেন বাদশা, জাফর ও মকলেছ। বাবার মৃত্যুর পর চাচারা আমাদের জমিজমা দখল নিতে মাকে বিভিন্ন সময় বিয়ের প্রস্তাব দিত। কিন্তু মা তাদের প্রস্তাবে রাজি হয়নি। সে কারণে তারা রামদা রড় দিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। আমাকে ও আমার মাকে কুপিয়ে জখম করেছে।
এ ব্যাপারে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সোহরাওয়াদী হোসেন বলেন, বিষয়টি আমাদের জানা নেই। এখনো পর্যন্ত থানায় কেও অভিযোগ করেননি। অভিযোগ আসলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।