পূরণ হতে চলছে এলাকাবাসীর চার যুগের স্বপ্ন। দীর্ঘদিনের কাঙ্খিত বলেশ্বর নদীতে রায়েন্দা মাছুয়া ফেরি বুধবার চালু হচ্ছে। ফেরি চালুকে কেন্দ্র করে শরণখোলা ও মঠবাড়িয়া উপজেলার মানুষের মধ্যে আনন্দের বন্যা বইছে। দক্ষিণঅঞ্চলের সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হবে। ইঞ্জিন চালিত ট্রলারে ঝুঁকি নিয়ে পারাপারের ক্ষেত্রে জনদূর্ভোগ লাঘব হবে।
দীর্ঘদিনের দাবীর প্রেক্ষিতে আসা এ ফেরি চালুর জন্য দুপাড়েই আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন পিরোজপুর ৩(মঠবাড়ীয়া) আসনের সাংসদ সদস্য ডাঃ রুস্তুম আলী ফরাজী ও বাগেরহাট -৪(শরণখোলা-মোড়েলগঞ্জ) আসনের সাংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলন। এ ফেরি চালু হলে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সামুদ্রিক বন্দর মংলা ও তৃতীয় সামুদ্রিক বন্দর পায়রা বন্দরের সাথে দ্রুত যোগাযোগের অপার সম্বাবনার দার উম্মোচন হবে। ফেরি ও ঘাটের গ্যাঙওয়ে স্থাপনের পর প্রতিদিন বিকালে অসংখ্য নারী পুরুষ শিশুসহ বিনোদন প্রেমিকরা এখানে ভিড় জমায়। ইতোমধ্যে ঐ এলাকা জমজমাট হয়ে উঠেছে।
বাগেরহাট-৪ (শরণখোলা-মোড়েলগঞ্জ) আসনের প্রায়ত প্রতিমন্ত্রী আলহাজ¦ ডাঃ মোজাম্মেল হোসেন, বর্তমান সাংসদ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলন, পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া) আসনের সংসদ সদস্য ও সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ডাঃ মোঃ রুস্তম আলী ফরাজি এবং মঠবাড়িয়ার কৃতী সন্তান সাবেক রেলপথ সচিব মোঃ মোফাজ্জেল হক মন্টুর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের গুরুত্বপূর্ণ এ ফেরী সার্ভিস দ্রুত অনুমোদন পায়।
গত ২২ অক্টোবর দুপারের জন্য দুটি পল্টুন ও একটি ফেরি এসে পৌছায়। চার/পাঁচ দিনের মধ্যে দুপাড়ে পল্টুন স্থাপন করেন। গাড়ি ওঠানামা ও লোকজন চলাচলের জন্য রাস্তা সম্প্রসারিত সহ অন্যান্য কাজ সম্প্রতি সম্পন্ন হয়েছে।
বাগেরহাট সড়ক ও জনপদ বিভাগ(সওজ)-এর ইঞ্জিনিয়ার মোঃ রিপন মিয়া এফএনএসকে বলেন, শরণখোলার পাঁচরাস্তার বাদল চত্বর থেকে রায়েন্দা ফেরিঘাট পর্যন্ত ২কোটি ৭৫লাখ টাকা ব্যয় ৪০৫মিটার কার্পেটিং সড়ক নির্মান করেন। অপর দিকে মঠবাড়িয়ার বড়মাছুয়া ঘাট সংলগ্ন অংশে ৮৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১৮ ফুট চওড়া ৫‘শ মিটার সড়ক ও পল্টুনের নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়েছে।
বাগেরহাট সড়ক ও জনপদ বিভাগ(সওজ)-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ফরিদ উদ্দীন জানায়, বলেশ্বরে এই ফেরি চালুর কারণে পায়রা থেকে মোংলা বন্দরের দূরত্ব প্রায় ৮০/৯০ কিলোমিটার কমে আসবে। পিরোজপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগ(সওজ)-এর নির্বাহী প্রকৌশলী তুহিন আল মামুন বলেন প্রমাত্বা বলেশ্বর নদী পারাপারের জন্য শরণখোলার রায়েন্দা ও মঠবাড়ীয়ার বড়মাছুয়া ইতোমধ্যে ফেরিঘাট ও পল্টন স্থাপন সহ সংযোগ সড়ক নির্মান সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরি উদ্বোধন করা হবে।
বড়মাছুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাছির হোসেন হাওলাদার জানান, ফেরী চালুর ফলে দুই উপজেলার সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব এবং খেয়া ঘাটের ইজাদারদের হয়রানি থেকে জনগণ মুক্তি পাবে।
বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলন এফএনএসকে বলেন - বর্তমান সরকার জনবান্ধব সরকার। সারা দেশে বিভিন্ন উন্নয়নের অংশ হিসেবে শরণখোলা মঠবাড়িয়া বলেশ্বর নদীতে ফেরি চালুর মধ্য দিয়ে উন্নয়নের আরেক ধাপ এগিযে যাচ্ছে। বড়মাছুয়া শরণখোলা ফেরি চালু হলে দক্ষিণঅঞ্চলের যে রোড ম্যাপ রয়েছে তা পরিপূর্ণতার দিকে এগিয়ে যাবে। এই ফেরি দক্ষিণঅঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া) আসনের সংসদ সদস্য ডাঃ মোঃ রুস্তম আলী ফরাজি জানান, এ সেতুবন্ধনের জন্য দুই উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষায় ছিলো। ফেরী চালুর মধ্য দিয়ে তাদের অপেক্ষার অবসান ঘটবে। এ ছাড়া খুলনা, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বাগেরহাট, মোংলা ও খুলনার সঙ্গে সেতু বন্ধন তৈরি হবে এবং যোগাযোগ সহজ হবে।