ঘুমন্ত স্ত্রীকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর লাশ নদীতে ফেলে দেওয়া এবং সাড়ে তিন বছরের ঘুমন্ত শিশু পুত্রকে নদীতে ফেলে হত্যার কথা স্বীকার করেছে গ্রেফতারকৃত আসামি আবুল বাশার।
বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক মোঃ মওদুদ আহমেদের কাছে ঘাতক আবুল বাশার তার স্ত্রী ও শিশু পুত্রকে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। বিচারক লোকহর্ষক এ ঘটনার জবানবন্দি গ্রহণ করে ঘাতক আবুল বাশারকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন।
বুধবার সকালে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে মুলাদী থানার ওসি এসএম মাকসুদুর রহমান জানান, আবুল বাশারের তিন স্ত্রী। পারিবারিক দ্বদ্ধের জেরধরে তাদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ লেগেই ছিলো। এ কারণে তৃতীয় স্ত্রী পপি বেগমকে বেঁদে বহরের নৌকা ছেড়ে চলে যেতে বলেন বাশার। কিন্তু পপি নৌকা ছেড়ে না যাওয়ায় গত ৪ নভেম্বর তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর লাশ জয়ন্তী নদীর রামচর এলাকায় ফেলে দেয় ঘাতক স্বামী আবুল বাশার। একই সময় পপির গর্ভে জন্মগ্রহণ করা সাড়ে তিন বছরের ঘুমন্ত শিশু পুত্র তুহিনকেও নদীতে ফেলে দেয়া হয়। শিশুটিকে নদীতে ফেলে দেওয়ার পর হাবুডুবু করে তলিয়ে যায়। নাবালক শিশুটিকে মুক্তি দিতেই নদীতে ফেলে হত্যা করার কথা আদালতে স্বীকার করে বাশার।
ওসি আরও জানান, এ ঘটনার দায় এড়াতে স্ত্রী পপি বেগম শিশু সন্তানসহ নিখোঁজ হয়েছে মর্মে গত ৪ নভেম্বর মুলাদী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন আবুল বাশার। জিডির তদন্তে গিয়ে আবুল বাশারের অসংলগ্ন কথাবার্তায় তদন্ত কর্মকর্তার সন্দেহ হয়। পরে পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে আবুল বাশার লোমহর্ষক হত্যার দায় স্বীকার করেন। পরবর্তীতে গত রোববার রাতে জয়ন্তী নদীর নাতিরচর এলাকা থেকে পপি বেগমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। শিশু তুহিনের লাশের এখনও কোন সন্ধ্যান মেলেনি। এ ঘটনায় পপি বেগমের ভাই চুন্নু সরদারের দায়ের করা মামলায় সোমবার ঘাতক আবুল বাশারকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মুলাদীর নাজিরপুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই ইমন কান্তি চৌধুরী জানান, নিহত পপি বেগম বাবুগঞ্জ উপজেলার রামারচর ক্ষুদ্রকাঠী গ্রামের ফজলুল হক সরদারের কন্যা। ঘাতক আবুল বাশার ভোলা সদরের বাসিন্দা মোঃ আনসার উদ্দিনের ছেলে। পপিসহ আবুল বাশারের তিনজন স্ত্রী ছিলো। পপি ও বাশার দম্পত্তি ভাসমান বেঁদে বহরের সদস্য ছিলেন।