দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন নিয়ে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে গুলি ও টেটাবিদ্ধ হয়ে তিনজন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চল বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের ভোট নিয়ে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। তাদের নরসিংদী সদর ও ব্রাহ্মনবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
নিহতরা হলেন- বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের বাঁশগাড়ি গ্রামের মৃত হেকিম মিয়ার ছেলে সালাউদ্দিন (৩০), আবদুল হক মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর (২৬) ও হাজী সিরাজ মিয়ার ছেলে দুলাল (৪৫)।
দুপুর পর্যন্ত জাহাঙ্গীর ও সালাহউদ্দিনের মৃতদেহ নরসিংদী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং দুলাল মিয়ার মৃতদেহ তার বাড়িতে রয়েছে। এই তিনজনই আওয়ামী লীগ প্রার্থী আশরাফুল হকের সমর্থক বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানান, রায়পুরা উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আশরাফুল হক ও সতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) রাতুল হাসান জাকিরের সমর্থকদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নির্বাচনে ভোট শুরু হওয়ার আগে সকাল ৬টার দিকে সংঘর্ষ বাধে। এতে ঘটনাস্থলেই গুলি ও টেটাবিদ্ধ হয়ে তিনজন নিহত হন। ঘটনার খবর পেয়ে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে পুলিশ প্রশাসন।
রায়পুরা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সত্যজিৎ কুমার ঘোষ বলেন, বাঁশগাড়িতে এখন পর্যন্ত গুলিবিদ্ধ একজনের মৃতদেহ এলাকায় রয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছি। নরসিংদী সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) হারুন অর-রশিদ জানান, বাঁশগাড়ীর ঘটনায় এ পর্যন্ত নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে দুইজনের মৃতদেহ এসেছে।
বৃহস্পতিবার দেশজুড়ে ইউপি নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ভোট চলছে। দেশজুড়ে নির্বাচন ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় নির্বাচন কমিশনও 'বিব্রত ও উদ্বিগ্ন'। এমন পরিস্থিতিতেই ৮৩৫ ইউনিয়ন পরিষদে সকাল ৮টা থেকে ভোট শুরু হয়; বিরতিহীনভাবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট চলবে।
দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনকে ঘিরেই সবচেয়ে বেশি সহিংসতা হয়েছে। এ ধাপে এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৩২ জন, আহত চার শতাধিক। তাই এ নির্বাচন নিয়ে উত্তেজনা ও শঙ্কা রয়েছে ভোটার আর প্রার্থীদের মধ্যে।
অবশ্য পাঁচটি ইউপির সবকয়টি পদে এবং ৮১টির চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীরা এরইমধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এ ছাড়া সংরক্ষিত সদস্যপদে ৭৬ জন এবং সাধারণ সদস্যপদে ২০৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।