দেশের দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে জোয়ারে পানিতে প্রতিনিয়ত লোকালয়সহ ফসলের সমতল ও নি¤œ ভূমি প্লাবিত হচ্ছে। অন্যদিকে প্রাকৃতি দুর্যোগে ঝড় জোলচ্ছ্বাসে নদ-নদী রক্ষার কয়েক দশকের পুরাতন বাঁধগুলো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। বর্তমানে এ দুই কারণে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে খুলনা পাইকগাছায় নদ-নদীর তীরবর্তী মানুষের। উপজেলার ৬টি পোল্ডারে ১৫৮ কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ রয়েছে। এ কারণে প্লাবনের শঙ্কায় রয়েছেন স্থানীয়রা। দক্ষিণের এই জনপদের মানুষকে বাঁচাতে টেঁঁকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি এবং প্রয়োজনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা। পাইকগাছায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৬টি পোল্ডারে ২৫০ কিলোমিটার ওয়াপদা বাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ১৫৮ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। বাঁধের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে পাইকগাছা উপসহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী রাজু আহম্মদ বলেন, উপজেলার ১০/১২ নম্বর পোল্ডারে ৪০ কি.মি ১৬ নম্বরে ৩৮ কি.মি ১৮/১৯ নম্বরে ২৫.৮ কি.মি ২৩ নম্বরে ২৬ কি.মি ২১ নম্বরে ১৬ কি.মি. এবং ২২ নম্বর পোল্ডারে ১৩ কি.মি. বাঁধ ঝুঁঁকিপূর্ণ রয়েছে। সুন্দরবনের কোলঘেঁষা দক্ষিণ উপকূলবর্তী জনপদ পাইকগাছা। জলবায়ু পরিবর্তন ও ভৌগোলিক কারণে দুর্যোগের শিকার এ অঞ্চলের মানুষ। বিশেষ করে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়িবাঁধ এলাকার মানুষের চরম বিপর্যয়ের মুখে ফেলে দিচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়াপদা বাঁধে নিয়মিত মাটির কাজ না হওয়ায় বাঁধের বেশির ভাগ ধসে গেছে। বর্তমানে নাজুক আকার ধারণ করেছে ষাটের দশকের এ বাঁধটি। এর আগে ২০০৭ সালের সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় সিডর, ২০০৯ সালে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় আইলাসহ ফণী, বুলবুলের জলোচ্ছ্বাসে গদাইপুর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া, সোলাদানা ইউনিয়নের হাঁড়িভাঙা, হরিখালী, পাটকেলপোতা, দ্বীপবেষ্টিত দেলুটির গেওবুনিয়া, দারুণ মল্লিক, দেলুটি, কালীনগর, লতা ইউনিয়নের লতা বাজার, গড়ইখালীর খুদখালী ও শান্তায় ওয়াপদা বাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হয়। নষ্ট হয় লাখ লাখ টাকার মৎস্য ও জমির ফসল। বন্যা, জলোচ্ছ্বাসের পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে জরুরি ভিত্তিতে টেঁকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তিনি আরও বলেন, নদীর তলদেশ ভরাট হওয়ার সঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ড যদি ওয়াপদা বাঁধ উঁচু করা হতো, তাহলে পানি লোকালয়ের পোল্ডারে ঢুকতে পারতো না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের খুলনা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম জানান, ওয়াপদা বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ পোল্ডারগুলোর তালিকা করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অর্থপ্রাপ্তি সাপেক্ষে শুষ্ক মৌসুমে কাজ শুরু হবে বলে আশা করছি।