ডিজেলের দাম বৃদ্ধির ফলে তিনদিন বাস ও লঞ্চের মালিকদের ডাকা ধর্মঘটে যাত্রী সাধারণকে নানা কষ্ট যন্ত্রণা শেষে যাত্রী ভাড়া পুন:নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ ও অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ। নির্ধারিত হারে ভাড়া বাড়লেও বাস যাত্রীদের কাছ থেকে ইচ্ছে মতো ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আর এ অভিযোগের সত্যতাও পাওয়া গেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের ভ্রাম্যমাণ আদালতের তদারকির মাধ্যমে। গত ৯ নভেম্বর ১৩টি ভ্রাম্যমাণ আদালত ২৭৫টি বাসে ভাড়া আদায়ের বিষয়টি তদারকি করে ৭৩টি বাসকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের জন্য ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেছে। অভিযানের সময় ৭২টি সিএনজি চালিত বাসে তদারকি করে ১২ টিকে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা হওয়া বাকি বাসগুলো ডিজেল চালিত। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বলছে, আদায় করা অতিরিক্ত ভাড়া যাত্রীদের ফিরত দেওয়া হয়েছে। বাসগুলো আবার যদি নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে তবে বাস কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শুধুমাত্র ডিজেল চালিত বাসের ভাড়া বাড়ানো হলেও সিএনজি চালিত বাসও পুন:নির্ধারিত ভাড়া আদায় করছে। এ নিয়ে অহরহ যাত্রী ও বাস কনট্রাক্টরের সাথে বচসা চোখে পড়ছে। সব শেষে যাত্রীকে অতিরিক্ত ভাড়াই গুনতে হচ্ছে। তাই বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সিএনজি চালিত বাসগুলো নির্ধারিত স্টিকার গাড়িতে সাটিয়ে চলবে। যাতে যাত্রী সাধারণ প্রতারিত না হন। বাস ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে বাস মালিকরা যে রাম রাজত্ব কায়েম করেছে, তা নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজন নিয়মিত যথাযথ মনিটরিং ব্যবস্থা। আশা করা যায় আগামী ১১ নভেম্বর থেকে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ, বাস মালিক ও শ্রমিক সমিতির নেতাদের নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত মনিটরিং শুরু করবে।
লঞ্চের যাত্রী সাধারণও পুন নির্ধারিত ভাড়া দিতে গিয়ে অতিরিক্ত অর্থ-গুনছেন। কিন্তু সেদিকে তদারকির জন্য কোনো কর্তৃপক্ষকে দেখা যাচ্ছে না। করোনা কালের স্থবির অর্থনীতি থেকে বেরিয়ে নতুন করে জীবন যুদ্ধ শুরু করার সময় যাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়ার ভার চাপ সহ্য করা সম্ভব নয়। তারপরও উপায় না থাকায় সহ্য করতে হচ্ছে। এর বাইরে সড়ক পথে ও জলপথে পণ্য আনা নেয়া করার খরচও বাড়ছে ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি হওয়ায়। ইতোমধ্যে এর প্রতিক্রিয়া বাজারে পড়ছে। নিত্য পণ্যের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। অথচ সাধারণ মানুষের আয় বাড়ে নি। বরং করোনার প্রকোপে অনেকে চাকুরী হারিয়ে বেকার হয়েছেন। এমন পরিস্থিতি তারা কি ভাবে পরিজন নিয়ে চলবেন, তা কারো জানা নেই। তারপরও যদি সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সব ক্ষেত্রে যথাযথ মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করে তবে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবে। তাই বাস ও লঞ্চের বর্ধিত ভাড়া আদায়ে সরকারের মনিটরিং এখন সময়ের দাবি।