আমন ধান ক্ষেতে ইঁদুরের উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন যশোরের কেশবপুরের কৃষকেরা। ইঁদুর নিধনে জিংক পাউডার, গ্যাস ট্যাবলেটসহ বিভিন্ন বিষ টোপ ব্যবহার করেও কোনো লাভ হচ্ছে না। ঠেকানো যাচ্ছে না ইঁদুরের উৎপাত। এর ফলে প্রায় ৭ থেকে ৯ ভাগ আমন ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই ধান রক্ষায় কৃষক এখন শিকারি বিড়াল দিয়ে ইঁদুর ধরা শুরু করেছে।
সরেজমিনে উপজেলার মজিদপুর, আটন্ডা, দেউলি, সাতবাড়িয়া, ভালুকঘর, বারুইহাটি, শিকারপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠ জুড়ে সবুজ ধান ক্ষেতে ইঁদুরের উৎপাত। ক্ষেতের জমিতে পানি না থাকার কারণে উৎপাত শুরু করেছে ইঁদুরের দল। ইঁদুর বেড়ে ওঠা ধান গাছ কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলছে। ওই সব জমিতে ধান গাছ হলুদ বর্ণ ধারণ করে মরে যাচ্ছে।
এলাকার কৃষকরা জানান, ইঁদুর নিধনে জিংক পাউডার, গ্যাস ট্যাবলেটসহ বিভিন্ন বিষ টোপ ব্যবহার করে কোন লাভ হচ্ছে না। এ বছরও আমন ধান ক্ষেতে ইঁদুরের উৎপাত শুরু হলে কৃষকেরা উপজেলা কৃষি অফিস ও স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে বিভিন্ন পদ্ধতি প্রয়োগ করেন। কিন্তু তাতেও আশানুরুপ সফলতা না পেয়ে ইঁদুর নিধনে মাটি পড়া থেকে শুরু করে অধিকাংশ কৃষক নিজের মত করে বিভিন্ন পদ্ধতি প্রয়োগ করছেন।
উপজেলার মজিদপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল হালিম, আব্দুল লতিফ বলেন, ধান কেটে মাটিতে পাতানোর পর ইঁদুরের উৎপাত ঠেকাতে তিনি নিজের পোষা শিকারী বিড়াল ধান ক্ষেতে রেখে আসেন। বিড়াল ইঁদুরও ধরছে। তারপরও ইঁদুরের উৎপাত কমছে না। সাতবাড়িয়া গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন জানান, তিনি বিষটোপ ব্যবহার করে দুই রাতে ১৫টি ইঁদুর মেরেছেন। প্রতিটি ইঁদুরের ওজন ২৫০ গ্রাম থেকে প্রায় আধা কেজি।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার বলেন, ইঁদুরের উৎপাতে ৭ থেকে ৯ ভাগ আমন ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জাতীয় ইঁদুর নিধন অভিযানে এ পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ধান ক্ষেত থেকে ৩ হাজার ৪৬৩টি ইঁদুর নিধন করা হয়েছে। ইঁদুর নিধনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কৃষকদের ফসল রক্ষা করার জন্য ক্ষেতে বিষ টোপ দিতে ও ফাঁদ ব্যবহার করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।