পাকা ধান খাওয়ার নেশায় পাহাড়ী ও সমতল এলাকায় হাতির আগমন ঘটেছে। এই বন্যহাতি তাড়াতে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের কৃষকরা। কয়েকদিনে পানিহাটা ফেকামারী এলাকায় অর্ধশতাধিক কৃষকের প্রায় ৩০-৪০ একর জমির পাকা আমন ধান খেয়ে ও পিষ্ট করে বিনষ্ট করেছে এই বন্যহাতির দল। এদিকে গত ১৬ নভেম্বর হাতি তাড়াতে প্রশাসন হতে এলাকার কিছু কৃষকের মাঝে সার্চলাইট বিতরন করা হয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, হাতিগুলো দিনের আলোতে পার্শ্ববর্তী পাহাড়ে অবস্থান করে। রাতের আঁধার নামলেই লোকালয়ে নেমে আসে এই হাতিগুলো। তান্ডব চালায় আমনের ফসলি জমিতে। এ অবস্থায় শত শত কৃষক রাত জেগে পাহারা বসিয়ে, পটকা ফাটিয়ে ও মশাল জ¦ালিয়ে লাঠি হাতে সরব থাকলেও বন্ধ করা যাচ্ছে না বন্য হাতির তান্ডব।
পাহাড়ি বন্য হাতির দল ভারতীয় মেঘালয় রাজ্যের চেরেংপাড়া পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থান করে দিনে পালিয়ে থাকে গহীন অরণ্যে। এরপর সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে নেমে আসে পাকা ফসলের জমিতে। হাতির এমন আচরণে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষকগন।
আশালতা নেংমিনজা ও হাসমত আলীসহ কয়েকজন কৃষক জানান, প্রতিবছরই পাহাড়ি এই হাতির দল ফসল ও মালের ব্যাপক ক্ষতি করছে। হাতির তান্ডবে এখন আমাদের রাত কাটে নির্ঘুমে।
পানিহাটা এলাকার এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের সভাপতি যোসেফ মারাক বলেন, কয়েকদিন ধরে আমন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করছে হাতির দল। বন্যহাতির আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ওয়াসিফ রহমান বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে পরবর্তী আবাদের জন্য তাদেরকে উচ্চ ফলনশীল ধানবীজ ও সার বিতরণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হেলেনা পারভীন বলেন, এ বিষয়ে ইতোমধ্যে একটা প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। সেচ্ছাসেবক ও প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। তালিকা পেলে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন চার্জার লাইট বিতরণ করা হবে। যা হাতি তাড়াতে সহায়তা করবে। এছাড়াও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষ প্রণোদনার মাধ্যমে তাদেরকে সহযোগিতা করা হবে।