শ্রীরবদী উপজেলার মালাকোচা এলাকার সোনাঝুঁড়ির এক টিলায় গত ৯ নভেম্বর ফসল রক্ষার্থে দেওয়া বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে বন্যহাতি মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বনবিভাগ। বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে বনবিভাগের বালিজুড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা ও মামলার বাদী রবিউল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত দুই যুগের বেশি সময় ধরে এ জেলায় বন্য হাতির আক্রমণে নিহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ ও আহত হয়েছেন শতাধিক। বাড়িঘর, ফসল, গাছপালার ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে কয়েক কোটি টাকা। একই সময়ে নানা কারণে মারা গেছে প্রায় ২৫টি বন্য হাতি। তবে এ ধরনের ঘটনায় বনবিভাগের পক্ষ থেকে আইনি পদক্ষেপ গ্রহন এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে বনবিভাগের পক্ষ থেকে দফায় দফায় সচেতনতামূলক সভা ও প্রচারণা চালানো হলেও বন্য হাতি মৃত্যুর ঘটনা কমছে না।
গত ৯ নভেম্বর রাতে একটি বন্য হাতির দল খাদ্যো সন্ধ্যানে গারো পাহাড়ের মালাকোচা এলাকার লোকালয়ে নেমে আসে। হাতির পাল যাতে ধান ক্ষেতে নামতে বাধা পায় এজন্য বৈদ্যুতিক ফাঁদ দেয় স্থানীয় কৃষকেরা। পরে ওই তারে জড়িয়ে একটি বন্য হাতির মৃত্যু হয়।
এবার প্রথম শেরপুরে বন্য হাতি হত্যার ঘটনায় ব্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ ধারায় হাতি মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শ্রীবরদী উপজেলার মালাকোচা এলাকার আমেজ উদ্দিন, সমেজ উদ্দিন, মো. আশরাফুল ও মো. শাহজালাল বিরুদ্ধে আদালতে এ মামলা করা হয়।
বনবিভাগের বালিজুড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম জানান, বনাঞ্চল বেদখল, বিশেষ করে পাহাড়ী অঞ্চলে হাতির অভয়ারণ্যগুলোতে বসতি গড়ে তোলার কারণে আবাসস্থল হারিয়েছে বন্যহাতি। পাশাপাশি খাবার সংকটে পড়ে হাতিগুলো বার বার লোকালয়ে হানা দিচ্ছে। হাতি কারও ফসল নষ্ট করলে তার ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে সরকার। এছাড়াও হাতিসহ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে বনবিভাগের তরফ থেকে দফায় দফায় সচেতনতামূলক সভা ও প্রচারণা চালানো হয়। তারপরও হাতির ওপর মানুষের আক্রোশ থামানো যাচ্ছে না। হাতি রক্ষায় মানুষের সচেতনতার বিকল্প নেই।
শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার বিশ্বাস বলেন, আদালতের কাগজ পাওয়া মাত্রই আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।