তালাকের পরও তা গোপন রেখে সাবেক স্ত্রীর সাথে শারীরিক সম্পর্কের অভিযোগে ধর্ষণের মামলায় শাহ আলী (৪৪) নামে এক সাবেক স্বামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন শেরপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। একইসাথে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে একমাত্র আসামির অনুপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মো. আখতারুজ্জামান। শাহ আলী শ্রীবরদী উপজেলার গড়জরিপা এলাকার কৃষক আবু বকরের ছেলে। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট গোলাম কিবরিয়া
বুলু জানান, শেরপুর সদর উপজেলার মধ্য বয়ড়া গ্রামে এক কৃষক পরিবারের মেয়েকে বিয়ে করেন শাহ আলী। ঘর-সংসারের একপর্যায়ে দাম্পত্য জীবনে নির্যাতন বেড়ে গেলে শাহ আলীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের একটি মামলা দায়ের করেন স্ত্রী। ওই মামলায় ২০১৪ সালের ৪ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে শাহ আলী ২০১২ সালের ১৩ মে স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন মর্মে কাগজপত্র দাখিল করেন। অন্যদিকে সেই তালাকের বিষয়টি গোপন রেখে সেদিন থেকে ২০১৪ সালের ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত দীর্ঘ প্রায় আড়াই বছর সাবেক স্ত্রীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক বহাল রাখায় ২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি শাহ আলী এবং তার মা-বাবাসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও সহায়তার অভিযোগে থানায় মামলা করেন ওই প্রতারিত গৃহবধূ। পরে তদন্ত শেষে একই বছরের ৮ জুন ৪ জনের বিরুদ্ধেই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন শ্রীবরদী থানার তৎকালীন এসআই আবুল কালাম। পরবর্তীতে ঘটনার পর থেকেই পলাতক থাকা শাহ
আলীর বিরুদ্ধে ওই মামলায় অভিযোগ গঠন হলেও অপর ৩ জনকে অব্যাহতি দেয় ট্রাইব্যুনাল। বিচারিক পর্যায়ে বাদী-ভিকটিম, চিকিৎসক ও তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকেওই সাজা দেওয়া হয়।