প্রথমবারের মতো দেশে ‘ক’ শ্রেণির মাদক ডিওবি উদ্ধার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, ঢাকার একটি দল। ‘খ’ শ্রেণির মাদক এলএসডি কারবারিদের গ্রেপ্তার অভিযান পরিচালনায় এসে খুলনায় নতুন এ মাদকটির সন্ধান মেলে। এ কারবারের সঙ্গে জড়িত তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদিকে, খুলনায় সুন্দরবন কুরিয়ারের একটি শাখা থেকে এ মাদকের চালান ‘বাহন’ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এ ঘটনায় ওই কুরিয়ারের শাখা কর্মকর্তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রো কার্যালয়ের (উত্তর) উপপরিচালক মোঃ রাশেদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- খুলনা মহানগরীর খালিশপুর থানার মুজগুন্নী আবাসিক এলাকার মৃত আফসার উদ্দিন আহম্মেদের ছেলে (ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার) মোঃ আসিফ আহম্মেদ শুভ (৩১), সোনাডাঙ্গা থানার বয়রা পূজাখোলা এলাকার অশোক কুমার শর্মার ছেলে অর্ণব কুমার শর্মা (৩০), অপরজন খুলনার বয়রা সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস শাখার ম্যানেজার মোঃ মামুনুর রশিদ (৩২)। তিনি বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জের সিংজোর বাজারের মোঃ জাহাঙ্গীর মোল্লার ছেলে। ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ ফজলুর রহমান ও ঢাকা মেট্রো কার্যালয়ের (উত্তর) উপপরিচালক মোঃ রাশেদুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে সহকারী পরিচালক মোঃ মেহেদী হাসানের নেতৃত্বে ২২ নভেম্বর (সোমবার) ঢাকা থেকে বিশেষ একটি টিম খুলনায় অভিযান পরিচালনা করেন। তারা প্রথমে আসামি আসিফ আহম্মেদ শুভকে গ্রেপ্তার করেন। পরে শুভ জানায়, ওই পাঁচটি এলএসডি সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের ম্যানেজার মোঃ মামুনুর রশীদের সহায়তায় তথ্য গোপন করে ঢাকায় প্রেরণ করে। জিজ্ঞাসাবাদে সে আরও জানায়, তার বন্ধু অর্ণব কুমার শর্মার কাছে বিপুল পরিমাণ ডিওবি নামক নতুন মাদক আছে। পরে অর্ণবের বাসায় অভিযান পরিচালনা করে ৯০টি ডিওবি উদ্ধার করা হয়। এরপর তাদের তথ্যমতে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের ম্যানেজার মোঃ মামুনুর রশিদকে গ্রেপ্তার করা হয়।মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঢাকা মেট্টো (উত্তর) কার্যালয়ের উপপরিচালক মোঃ রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘দেশে নতুন মাদকের বিস্তার রোধে কাজ করে যাচ্ছি। বাংলাদেশে ইয়াবা (২০০২ সাল), সীসা (২০০৮ সাল), আইস (২০১৯ সাল), এলএসডি (২০১৯ সাল)সহ বিভিন্ন মাদকের প্রথম চালান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জব্দ করে। এরই ধারাবাহিকতায় খুলনা থেকে ৪-ব্রোমো-২,৫-ডাইমিথোক্সি এমফিটামাইন যা সাধারণ ডাইমিথোক্সি ব্রোমো এমফিটামাইন, ব্রোল এমফিটামাইল, ব্রোমো-ডিএমএ অথবা ডিওবি নামক নতুন একটি মাদক উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। এটি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ (সংশোধিত ২০২০) এর ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত মাদক।’মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ ফজলুর রহমান বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী কুরিয়ারে প্রেরকের মোবাইল নম্বর ও জাতীয় পরিচয়পত্র রাখার কথা কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠানগুলোর। কিন্তু সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের বয়রা শাখার ব্যবস্থাপক মামুনুর রশীদ নিজেই এর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তাই এ ক্ষেত্রে তা করা হয়নি।’