ইভিএম টা কি? মেশিন নাকি কম্পিউটার। ভোট কি মেশিনই দিবে? কে কিভাবে কোথায় টিপ দিবে। আমরা তাহলে কি করব? এক মার্কায় দিলে আরেক মার্কায় চলে যাবে নাতো? ব্যালট আর সীল দিবে না কেন? ভোট দিব কিভাবে? গণনা কিভাবে ও কারা করবে? কোন কারচুপি হবে নাতো? মেশিন টিপতে টিপতে সময় শেষ হয়ে যাবে। ভোট কাষ্ট হবে কম। এখনোও তো এখানকার শতকরা অর্ধেক নারী পুরূষ ইভিএম বুঝে না। তাহলে তারা ২৮ তারিখ ভোট টা দিবে কিভাবে? এমন সব হাজারো প্রশ্ন এখন ঘুর পাক খাচ্ছে সরাইল সদর ইউনিয়নের ৩৬ হাজার ভোটারের মনে। চিন্তায় ঘুম হারাম অনেক প্রার্থীরও। তবে আশার বাণী হচ্ছে দিন ব্যাপী ‘মক ভোটিং’ এর মাধ্যমে আজ (২৬ নভেম্বর) ইভিএম বিষয়ে ভোটারদের শিক্ষা দেয়া হবে। সরজমিনে প্রার্থী ও ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সরাইল উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নের মধ্যে শুধু সদর ইউনিয়নে ১৫টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহন হবে ইভিএম (ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিন) পদ্ধতিতে। যা সরাইলের ইতিহাসে প্রথম। বাকি ৮ টি ইউনিয়নে আগের পদ্ধতিতে ব্যালট ও সীলের মাধ্যমেই হবে ভোট গ্রহন। ইভিএম পদ্ধতি সম্পর্কে কোন ধরণের ধারণা নেই এখানকার ভোটারদের। বিশেষ করে স্বল্প শিক্ষিত ও নিরক্ষর লোকজন ইভিএম বিষয়ে একেবারেই অজ্ঞ। তাদের ধারণা ভোট দিতেই পারবেন না। অথবা ভোট দিলেও ভুলের কারণে বাতিল হয়ে যাবে। মোটামুটি বা উচ্চ শিক্ষিত শ্রেণির লোকজন ভোট দিতে পারার ধারণা পোষন করলেও টেনশনে আছেন তারা। কারণ জীবনের প্রথম এ পদ্ধতিতে ভোটে ভুল হবেই। এ ছাড়া পছন্দের বাহিরের প্রতীকেও চলে যেতে পারে ভোট। তাই অধিকাংশ ভোটারকেই ভাবনায় ফেলে দিয়েছে একেবারে নতুন এ পদ্ধতি। বড় দেওয়ান পাড়ার সাধারণ ভোটার আবুল হোসেন, রোকসানা বেগম, হনুফা বেগম, আকবর ঠাকুর, কাচারিপাড়ার হুমায়ুন মিয়া, রিনা বেগম, আবু সিদ্দিক, রাশেদা সহ অনেকে বলেন, ইভিএম শুনে কেন্দ্রে যাওয়ার ইচ্ছে হচ্ছে না। এটা নাকি কারেন্টে মেশিনে হবে ভোট। জীবনে এই নামও শুনি নাই। আমাদেরকে কেউ পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণাও দেয়নি। ভোট দিতে অনেক সময় লাগতে পারে। জীবনের প্রথম এই পদ্ধতিতে ভোট বাতিলও হয়ে যেতে পারে। ভোট নিয়ে খুবই চিন্তায় আছি। স্কুল শিক্ষক আব্বাস উদ্দিন বলেন, আমরা নিজেরা এ পদ্ধতি কোন দিন দেখিনি। তাই কিছু বুঝিও না। ব্যবসায়ি বিপ্লব হোসেন বলেন, এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে ভাল একটা ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। তবে এ বিষয়ে কিছুটা হলেও আশা জাগিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার সরাইল সদরে ‘মক ভোটিং’ কর্মশালার মাইকিং হয়েছে। মাইকিং-এ বলা হয়েছে সরাইল সদর ইউনিয়নের ১৫টি কেন্দ্রেই আজ ২৬ নভেম্বর শুক্রবার সকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত চলবে ‘মক ভোটিং’ কর্মশালা। এ কর্মশালার মাধ্যমে ভোটারদের ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দেয়ার বিষয়ে শিক্ষা দেয়া হবে। ভোটার মো. জাহাঙ্গীর ঠাকুর বলেন, একটি কেন্দ্রের আওতাধীন সকল ভোটার নারী পুরূষ ‘মক ভোটিং’ কর্মশালা দেখার সুযোগ নাও পেতে পারেন। এ ছাড়া স্বল্প সময়ে সকল ভোটার বিষয়টি বুঝবেন না। রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল আজীজ ও সহিদ খালিদ জামিল খান বলেন, এখানে যেহেতু ইভিএম পদ্ধতিটি একেবারেই প্রথম। তাই ভোটাররা ভাবনায় পড়েছে। তবে ‘মক ভোটিং’ প্রোগ্রামটি দেখার পর ভোটারদের ধারণা অনেকটা পাল্টে যাবে।