প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বলেছেন, খুলনাবাসীর দীর্ঘ প্রত্যাশিত ভৈরব সেতু নিয়ে বিভ্রান্তির কোন সুযোগ নেই। নির্ধারিত স্থানে ভৈরব সেতু নির্মিত হচ্ছে এবং হবে। ভৈরব সেতুর কাজ চলমান আছে। জমি অধিগ্রহণে সৃষ্ট জটিলতা নিরসন হচ্ছে। দ্রুতই ভৈরব সেতু নির্মাণ কাজের গতি ফিরবে।
তিনি বলেন, ভৈরব সেতুটি নির্মাণের ডিপিপি প্রস্তুতের আগে সাব-সোয়েল ইনভেস্টিগেশন, ফিজিবিলিটি স্টাডি, হাইড্রোলজি এ- মরফোলজি তৈরীর সময় প্রকল্প সাইটটি অনেকবার সরেজমিনে পরিদর্শন, সার্ভে এবং মিজারমেন্ট করা হয়। ব্রীজ সাইট ফিজিবিলিটি স্টাডি, হাইড্রোলজি এ- মরফোলজি স্টাডির মাধ্যমে ব্রীজের এলাইনমেন্ট চূড়ান্ত করে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী, সওজ ব্রীজ ম্যামেজমেন্ট উইং- এর স্বারক নং- ২৩৫ তাং ১২/০৮/২০১৮ খ্রিঃ মোতাবেক ব্রীজের ডিজাইন চূড়ান্ত করা হয়। অতঃপর প্রকল্পের ডিপিপি প্রস্তুত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রেরণ করা হয়। এরপর ১৭/১২/২০১৯ ভৈরব সেতু নির্মাণ প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একনেক সভায় অনুমোদিত হয় এবং ২২/১১/২০২০ তারিখে প্রকল্পটির কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। সকল নিয়ন নীতি মেনেই ভৈরব সেতুর নির্মাণ কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। এখানে বিভ্রান্তির কোন সুযোগ নেই।
এ প্রতিবেদকের সাথে টেলিফোনে একান্ত আলাপচারীতায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, তেরখাদার সন্তান তৎকালীন খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) এর নির্বাহী প্রকৌশলী তাপসী দাশ এবং দিঘলিয়া উপজেলার ব্রক্ষগাতী গ্রামের সন্তান ও তৎকালীন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ( এলজিইডি)'র উপ- পরিচালক মোঃ নজরুল ইসলাম ভৈরব সেতু নির্মাণ কাজের উদ্বোধনীর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত বিশেষ অবদান রেখেছে।
২০০১ সালের ২২ এপ্রিল খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার পথেরবাজার মাধ্যমিক বিদালয় মাঠ প্রাঙ্গণে এলাকাবাসীর পক্ষে তৎকালীন জাতীয় সংদের হুইপ প্রয়াত এস এম মোস্তফা রশিদী সুজার দাবীর প্রেক্ষিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভাগীয় শহর খুলনার সঙ্গে দিঘলিয়া উপজেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষে ভৈরব নদীর উপর সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু ২০০১ সালের অক্টোবরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আ.লীগ পরাজিত হওয়ার কারণে ভৈরব নদীর উপর সেতু নির্মাণের বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়।
পরবর্তীতে ২০০৯ সালে আ.লীগ আবার ক্ষমতায় আসলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ও দিঘলিয়ার সুগন্ধি গ্রামের কৃতী সন্তান ড. মশিউর রহমান ভৈরব নদীর উপর সেতু নির্মাণে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের বিষয়টি নিয়ে তৎপরতা শুরু করেন। এ লক্ষ্যে তিনি ২০১৬ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ভৈরব ও আড়ুয়া আতাই নদীর উপর সেতু নির্মাণের জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রী বরাবরে একটি ডিও লেটার প্রদান করেন।
পরবর্তীতে তাঁর এ তৎপরতার সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন তৎকালীন খুলনা -৪ আসনের সংসদ সদস্য যথাক্রমে আলহাজ¦ মোল্লা জালাল উদ্দিন, এস এম মোস্তফা রশিদী সুজা ও বর্তমান সংসদ সদস্য আবদুস সালাম মূর্শেদী। যাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলে দিঘলিয়া- (রেলিগেট) আড়ুয়া -গাজীরহাট -তেরখাদা সড়কের (জেড- ৭০৪০) ১ম কিলোমিটার ভৈরব নদীর উপর নির্মিত হচ্ছে খুলনাবাসীর দীর্ঘ প্রত্যাশিত ভৈরব সেতু।