লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের দুই ইউপিতে তিন চেয়ারম্যান প্রার্থীর তিনটি নির্বাচনী অফিস ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বত্তরা। অভিযোগ করেছেন ইছাপুর ও ভাদুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ সমর্থিত নৌক মার্কার প্রার্থীসহ স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী। বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮ টার দিকে উপজেলার ইছাপুর ও ভাটরা ইউপিতে চেয়াম্যান প্রার্থীদের নির্বাচনী অফিসে হামলা ও অগ্নিসংযোগ চালায় দুর্বত্তরা। পৃথক তিনটি ঘটনায় পথচারীসহ আহত হন ৫ জন। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কম্পেলেক্য্র ভর্তি করলে। আহতরা মামলার ভয়ে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে চিকিৎসা চালাচ্ছেন বলে জানান আহতরা।
পুলিশ জানান, তিনটি ঘটনাই রামগঞ্জ থানায় তিনটি মামলা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রাতেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ছাড়া মামলার পর এজহার নামিয় ৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে পরিস্থিতির সার্থে আটকৃতদের নাম প্রকাশা করেনি পুলিশ।
স্থানীয় লোকজন ও চেয়ারম্যান প্রার্থীরা অভিযোগ করে জানান, রাত সাড়ে ৮ টার দিকে রামগঞ্জের ইছাপুর ইউপির নয়নপুর এলাকার প্রতিপক্ষকে ফাসাতে ও ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক ছড়াতে নৌকা মার্কা সমর্থিত শাহনাজ আক্তারের নির্বাচনী অফিসে ভাংচুরের নাটক সাজানো হয়। প্রচার করা হয় নৌকা মার্কার নির্বাচনী অফিসে ও অগ্নিসংযোগ করে অফিসের চেয়ার-টেবিল ভাংচুর করে হামলাকারীরা। এরপর পরই ওই রাতে ইছাপুর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র আনারস মার্কার প্রার্থী আমির হোসেন খাঁনের নির্বাচনী অফিস উত্তর শ্রীরামপুর এলাকায় অগ্নিসংযোগ করা হয়। ঘটনা দুটির পর থেকে ওই ইউনিয়নে আতঙ্ক ছড়াতে তারা বেশ কিছু ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় হামলা কারিরা। একই ঘটনা ঘটে ওই উপজেলার ভাটরা ইউনিয়নেরও। এ ঘটনায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস প্রতীকের শেখ শামছুল আলম বুলবুলকে দায়ি করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবুল হোসেন মিঠু। তিনি বলেন, ১৫/২০ টি মোটরসাইকেল যোগে আনারসের স্লোগান দিয়ে হেলমেট পরিহিত লোকজন এসে নৌকার নির্বাচনী অফিসে হামলা করেছে। এ সময় অফিসের চেয়ার-টেবিল ভাংচুর করে হামলাকারীরা। হামলায় আলমগীর হোসেন ও সোহাগ নামে দুই আওয়ামী লীগ কর্মী আহত হয়েছে বলে জানান তিনি। তবে ঘটনায় জড়িত নন বলে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ শামছুল আলম।
ইছাপুর ইউনিয়নে নৌকা মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহনাজ আক্তার জানান,শান্তিপূর্ণ ভোট চান তিনি। নির্বাচনে ভোটাররা যাতে এসে ভোট দিতে পারে এজন্য তিনি প্রশাসনের নিকট সুষ্ঠু পরিবেশ দেখতে চান উল্লেখ করেন তিনি।
অপরদিক ওই ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস মার্কার প্রার্থী আমিনর হোসেন খানঁ জানান, তাকে নির্বাচন থেকে সড়াতে নয়নপুর এলাকায় কয়েকটি চেয়ার টেবিল ভাংচুর করে মিথ্যে ঘটনা সাজিয়েছেন নৌকা মার্কার তার প্রতিদ্বন্ধিপ্রার্থী। এর আগে তার নির্বাচনী অফিস শ্রীরামপুর এলাকা ভাংচুরসহ অগ্নিসংযোগ করে নৌকা সমর্থিত প্রার্থীর লোকজন। তিনি আরো জানান, তার আনারস মার্কার ভোটাররা যাতে ভয়-ভীতি থাকে তার জন্য মিথ্যে মামলা করেন নৌকা মার্কার প্রার্থী। তার নির্বাচনী অফিস ভাংচুরের ঘটনায় থানায় এজহার ও রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসে অভিযোগ দিয়েছেন উল্লেখ করেন তিনি।
রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে কয়েকটি চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নির্বাচনী অফিস ভাংচুরের ঘটনায়র খবরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পরে সেই ঘটনায় তদন্তকরে মামলা নেয়া হয়েছে। পুলিশ এ পর্যন্ত ভাংচুরের ঘটনায় ৭ জনকে আটক করেছে। প্ররিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে পুলিশ কাজ করছে।
উল্লেখ্য, তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আগামী ২৮ নভেম্বর রামগঞ্জ উপজেলার ভাটরা ইউনিয়নসহ ১০ টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।