আমদানিকৃত ভোগ্যপণ্য বন্দর থেকে গুদামে নেয়ার পথেই চুরি হয়ে যাচ্ছে। বিগত কয়েক বছর ধরেই আমদানি করা পণ্য পথে চুরি হলেও গত এক বছরে তা মারাত্মক আকার ধারণ করছে। বন্দর থেকে গুদাম বা চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে আনার পথেই একেকজন আমদানিকারকের প্রতি চালানে ১০ থেকে ১৫ টন পণ্য চুরি হয়ে যাচ্ছে। আর তাতে ব্যবসায়ীরা লাখ লাখ টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। ভয়ংকর এ চুরির সঙ্গে পরিবহনের কতিপয় চালক, হেলপার ও শ্রমিক সংগঠনের অসাধু নেতাদের সমন্বয়ে গঠিত কয়েকটি সিন্ডিকেট জড়িত। অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠা ওসব সিন্ডিকেট চট্টগ্রাম নগরীর কমপক্ষে ১৫ পয়েন্টে তৎপর। তবে ইতোমধ্যে ওসব সিন্ডিকেটের তৎপরতা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানিয়েছে চট্টগ্রামের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খালাস হওয়া আমদানি করা ভোগ্যপণ্য চুরি সিন্ডিকেটে জড়িত রয়েছে পণ্য পরিবহনকারী পরিবহনের চালক ও সহকারী। তাদের নেপথ্য সহযোগী রয়েছে পরিবহন সমিতির কয়েকজন নেতা। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খালাস হওয়া পণ্য গুদাম কিংবা চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে আনার পথে কমপক্ষে ১৫ পয়েন্টে নিয়মিত চুরি হয়। ওসব স্পটের মধ্যে রয়েছে ইছহাক ডিপো এলাকার রেল বিট, সল্টগোলা ক্রসিং, টোল রোডের টোল প্লাজাসংলগ্ন চোচালা ব্রিজ, পোর্ট কলোনি, নিমতলা বিশ্বরোড, বারেক বিল্ডিং এলাকা, মাঝিরঘাট স্কেলের প্রবেশমুখ, ধনিয়ালাপাড়া, দেওয়ানহাট ফ্লাইওভার, ঈদগাহ কাঁচা রাস্তার মোড়।
সূত্র জানায়, বিগত ১০ বছর ধরেই বন্দর থেকে খালাস হওয়া ভোগ্যপণ্য চুরি হচ্ছে। কিন্তু গত এক বছরে তা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। খালাসের পথেপ্রতি চালান থেকে ২ থেকে ৫ শতাংশ পণ্য চুরি হয়। চুরি হওয়া ভোগ্যপণ্যের মধ্যে মসলা জাতীয় পণ্য, সরিষা, মটর, ছনা, মসুর ডাল অন্যতম।
এদিকে এ প্রসঙ্গ চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, ভোগ্যপণ্য বন্দর থেকে খালাস করে গুদাম কিংবা চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে নেয়ার পথে প্রায়ই চুরির ঘটনা ঘটছে। আমদানি করা পণ্য চুরি বন্ধে প্রতিকার চেয়ে সিএমপি কমিশনার ও জেলা পুলিশ সুপারকে চিঠি দেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর জানান, বন্দর থেকে ভোগ্যপণ্য নেয়ার পথে চুরি হয় ব্যবসায়ীরা এমন অভিযোগ করেছে। পুলিশ অভিযোগটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। ইতোমধ্যে চুরির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার কাজ শুরু হয়েছে।