বাংলাদেশের চরাঞ্চল খুবই সম্ভাবনাময় এক জায়গায়। সরকারি-অসরকারি সব সংগঠেেনর সমন্বয়ে চরাঞ্চলের মানুষের জীবন-জীবিকার উন্নয়নসহ সবক্ষেত্রেই বড় ধরনের পরিবর্তন উন্নয়ন সম্ভব। এ কারণে জলবায়ু সহায়ক অর্ন্তুভুক্তিমূলক উন্নয়ন প্রয়োজন। মনে রাখতে হবে চরের সমগ্র জনগোষ্ঠীকে পেছনে রেখে দেশের টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। এ কারণে চরের ১ কোটি মানুষের উন্নয়নে বিশেষ নজর দিতে হবে।’
রোববার দিনব্যাপি রংপুরে আরডিআরএস মিলনায়তনে কেয়ার বাংলাদেশ, ন্যাশনাল চর অ্যালায়েন্স এবং উন্নয়ন সমন্বয় আয়োজিত আঞ্চলিক চর সম্মেলন সাফল্য, সম্ভাবনা ও আগামীর অগ্রাধিকার বিষয়ক অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন। ন্যাশশনাল চর অ্যালায়েন্সের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, উন্নয়ন সমন্বয়ের চেয়ারম্যান ড. আতিউর রহমানে সভাপতিত্বে আঞ্চলিক চর সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম এমপি। প্রথম পর্বের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম এমপি বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধান লক্ষ্য কাউকে ফেলে উন্নয়ন নয়। এ কারণে এদেশের প্রতিটি মানুষের উন্নয়নে সরকার নিবিড়ভাবে কাজ করছে। তিনি বলেন, সরকারের উন্নয়নের মহাপরিকল্পনার মধ্যে চরাঞ্চল রয়েছে। চরের সবচেয়ে বড় সমস্যা নদী ভাঙ্গন। নদী ভাঙ্গন ঠেকাতে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে সরকার কাঝ করছে। তিস্তা মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হবেই। তিনি বলেন,আগে প্রতিবছর ৬ হাজার হেক্টর জমি নদী গর্ভে যেত। এখন প্রতি বছর নদী ভাঙ্গছে ত হাজার জ্টোর। আগামীতে নদী ভাঙ্গনের পরিমান আরও কমবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি ন্যাশনাল চর অ্যালায়েন্সের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, উন্নয়ন সমন্বয়ের চেয়ারম্যান ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে চরবাসীর অনেক অবদান রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে চরের মানুষের সাহসিকতার ইতিহাস লিপিবদ্ধ করতে হবে। তিনি উল্লেখ করেন নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ চরের বাসিন্দারা প্রতিনিয়ত অসংখ্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয় এবং সারাক্ষণই চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে বসবাস করতে বাধ্য হয় তারা। তবে শেষপর্যন্ত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে নিজস্ব উদ্ভাবন, সরকারের সমর্থন এবং দেশি বিদেশি সংস্থার সহায়তায় এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্ষমতা অর্জন করে চরবাসী।’ তিনি চরের শত সম্ভাবনা এগিয়ে নিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে আহবান জানান।
শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি। কেয়ার বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সম্মেলনে সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন কেয়ারের চীফ অফ পার্টি মার্ক নসবাক। চরাঞ্চলের উন্নয়ন কার্যক্রমে সমন্বিতভাবে অংশীজনের সম্পৃকতকরণের খসড়া প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন কেয়ার বাংলাদেশের অ্যাডভাইজার (গভর্ণমেন্ট এ্ড কমিউনিটি এনগেজমেন্ট) আবদুল মান্নান মজুমদার। আঞ্চলিক চর সম্মেলনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন ন্যাশনাল চর অ্যালায়েন্সের সদস্য সচিব জাহিদ রহমান।
প্রথম অধিবেশনের পরে চরাঞ্চলের উন্নয়নে সাফল্য ও সম্ভাবনা এবং চরাঞ্চলের উন্নয়নে চালেঞ্জ ও সমাধান বিষয়ক দুটি প্যারালাল সেসন অনুষ্ঠিত হয়। এই দুটি সেশনে মুক্ত আলোচনা পর্বে বিভিন্ন দুর্গম চর থেকে আগত চরবাসী ও জনপ্রতিনিধিবৃন্দ বক্তব্য প্রদান করেন।
বিকেলে সমাপনী অনুষ্ঠান হয়। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কুড়িগ্রাম ৩ আসনের সংসদ সদস্য এম এ মতিন। সমাপনী পর্বে সংসদ সদস্য এম এ মতিন বলেন, চরের উন্নয়নে অনেক ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বর্তমান সরকার সে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে চরবাসীকে উন্নয়নের ধারায় এগিয়ে নেত অঙ্গীকারাবদ্ধ।
সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কেয়ার বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টও রমেশ সিং। সম্মানিত আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিকেএমইএ-এর ডিরেক্টর মো. আখতার হোসেন অপূর্ব। আঞ্চলিক এই চর সম্মেলনে সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, বিভিন্ন উন্নয়ন সংগঠনের প্রতিনিধি, বিষয় বিশেষজ্ঞ অংশগ্রহণ করেন।