আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনের লক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন সরাইল উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসন। প্রস্তুতি সভায় একই মাপ ও ধরণের ৫ শতাধিক নতুন জাতীয় পতাকা তৈরী করে প্রধান সড়কের পাশে স্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলোতে প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন। জাতীয় পতাকার গুরূত্ব, সম্মান, পরিমাপ ও উত্তোলনের নিয়মের বিষয়ে আরো উদ্ভুদ্ধ করতেই এ পদক্ষেপ নিয়েছেন। সভায় আগামী ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের গুরূত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরা হয়েছে। ওইদিন শহীদদের স্মরণে শহীদ মিনারে পুষ্ফস্তবক অর্পণের মাধ্যমে সম্মান প্রদর্শনের সিদ্ধান্তও হয়েছে। সরাইলের সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবি (সরকারি গেজেটভুক্ত) সৈয়দ আকবর হোসেন বকুল মিয়া ও তার সহোদর ছোট ভাই শহীদ সৈয়দ আফজাল হোসেনের সমাধিতে ফুল দিয়ে সম্মান জানানোর প্রস্তাবও করেন বক্তারা। সূত্র জানায়, রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত বিভিন্ন জাতীয় দিবসে সরাইলের কয়েকটি মার্কেটে ও প্রধান সড়কের পাশের অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জাতীয় পতাকা উত্তোলন না করার বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এসেছে। আবার অনেক প্রতিষ্ঠান ছোট, ময়লাযুক্ত, পুরাতন ও কুছলানো পতাকা যেনতেন ভাবে উত্তোলন করে থাকেন। অনেকে বিজয় দিবসে অর্ধনমিত আর শোক দিবসে পূর্ণাঙ্গভাবে পতাকা উত্তোলন করেন। বেশ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পতাকা উত্তোলনই করেন না। যা আত্মমর্যাদা সম্পন্ন একটি জাতির কাছ থেকে কখনো প্রত্যাশিত নয়। গুরূতপূর্ণ দিবস সমূহে লাল সবুজের পতাকাটির মনগড়া উত্তোলনে স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিবর্গ ও মুক্তিযোদ্ধাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়। বিষয়টি গুরূত্ব দিয়ে অনুধাবন করেছেন উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসন। গত ৫ ডিসেম্বর রোববার নির্বাহী অফিসার মো. আরিফুল হক মৃদুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর। সভার শুরূতেই জাতীয় পতাকা উত্তোলনে স্থানীয় পর্যায়ে নানাবিধ সমস্যার কথা তুলে ধরেন সভাপতি। সমস্যা সমাধানের লক্ষে উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে একই মাপের রং-এর ২ শতাধিক জাতীয় পতাকা ও ষ্ট্যান্ড তৈরী করে কমিটির মাধ্যমে সরাইল হাসপাতাল মোড় থেকে প্রাত:বাজার পর্যন্ত সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে প্রদানের প্রস্তাব দেন ইউএনও। এ উদ্যোগের প্রশংসা করে সমর্থন করেন উপস্থিত সদস্যরা। বিজয় দিবসে বিকাল ৩টায় দেশের সকল শ্রেণি পেশার মানুষের অংশগ্রহণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শপথ গ্রহন করানোর বিষয়টিও আলোচনায় আসে। সভায় আগামী ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। ইউএনও বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট সকলে এগিয়ে আসলে পতাকা তৈরীর প্রস্তাবটি শতভাগ কার্যকরি হবে। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- ভাইস চেয়ারম্যান মো. আবু হানিফ, সরাইল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মৃধা আহমাদুল কামাল, স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মো. নোমান মিয়া, সরাইল মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ বদর উদ্দিন, পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. সুমন মিয়া, নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আশরাফ উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. ইসমত আলী, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মো. আনোয়ার হোসেন, ত্রিতাল সঙ্গীত নিকেতনের অধ্যক্ষ সঞ্জীব কুমার দেবনাথ, সরাইল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুব খান ও এনজিও প্রতিনিধি মো. শরীফ উদ্দিন প্রমূখ।