জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল স্থাপন নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যকারী রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলীকে তিনদিনের রিমান্ডে দিয়েছেন আদালত। সোমবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে শুনানি শেষে আব্বাসের জামিন আবেদন নাকচ করে রাজশাহীর মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট (এমএম) আদালত-২ এর বিচারক শংকর কুমার এই রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
এর আগে আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিন আবেদন করলেও মহানগরীর বোয়ালিয়া থানা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) তাকে আদালতে সোপর্দের পর ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানি শেষে সোমবার দুপুরে মেয়র আব্বাসের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালতের বিচারক।
জানা গেছে, গত বুধবার (১ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানী ঢাকার কাকরাইলে অবস্থিত হোটেল রাজমণি ঈসা খাঁ-তে অভিযান চালিয়ে রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলীকে গ্রেপ্তার করেন র্যাব সদস্যরা। পরে গত বৃহস্পতিবার ভোরে তাকে নিয়ে রাজশাহী পৌঁছায় বোয়ালিয়া থানা পুলিশ।
এর আগে জাতির জনকের ম্যুরাল স্থাপন নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে ২৩ নভেম্বর রাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়। পরে পুলিশ সদর দপ্তরের অনুমোদনের পর ২৪ নভেম্বর মামলাটি গ্রহণ করা হয়। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবদুল মোমিন বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পান বোয়ালিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহাবুল আলম। এরপর রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলী গা ঢাকা দেন।
প্রসজ্ঞত, নৌকা প্রতীকে দুইবারের নির্বাচিত রাজশাহীর কাটাখালি পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলী সম্প্রতি একটি বৈঠকে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কের পৌরসভার অংশের উন্নয়নকাজ নিয়ে কথা বলার সময় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করেন। গত ২২ নভেম্বর রাত থেকে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তিকৃত মেয়র আব্বাস আলীর দুটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। অন্য আরেকটি অডিওতে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সমালোচনা করা হয়। ঘরোয়া বৈঠকের ওই কথোপকথনে অশ্লীল ভাষায় গালাগালও রয়েছে। এ দুটি অডিও ছড়িয়ে পড়ার পর রাজশাহীতে তোলপাড় শুরু হয়। এ ঘটনায় মেয়র আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। এরপর জেলা ও কাটাখালী পৌরসভা আওয়ামী লীগের পদ থেকে তাকে বহিস্কার করা হয়। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে তাকে স্থায়ীভাবে বহিস্কারের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটিকে সুপারিশ করেন জেলা আওয়ামী লীগ। আর তখন থেকেই গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। এছাড়াও গত সোমবার রাতে কাটাখালী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর খোকনুজ্জামান মাসুদ বিতর্কিত এই মেয়রকে ধরিয়ে দিতে এক লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেন।