বাংলাদেশ ছাত্রলীগ খুলনার পাইকগাছা উপজেলা শাখার মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত করে এক বছরের জন্য ২১ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি ঘোষণা করেছে জেলা ছাত্রলীগ। একই সাথে আগামী এক বছরের জন্য পাইকগাছা পৌরসভা ছাত্রলীগেরও ১৬ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। গত ৯ ডিসেম্বর খুলনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. পারভেজ হাওলাদার ও সাধারণ সম্পাদক মো. ইমরান হোসেন স্বাক্ষরিত পৃথক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। উপজেলা ও পৌরসভা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটি নেতৃবৃন্দ অভিনন্দন জানিয়েছেন জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র ৮জন নেতা। উপজেলা ও পৌরসভা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটি নেতৃবৃন্দ শুক্রবার সকালে খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রবিন রাজনীতিবীদ শেখ হারুন অর রশীদ এর বাসায় যেয়ে ফুলের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন বলে জানাগেছে। এ সময় তিনি নবগঠিত কমিটি নেতৃবৃন্দকে রাজনৈতিক পরামর্শ ও অভিনন্দন জানান। খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য এ্যাড. সোহরাব আলী সানাকে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি। তবে তার নিকট জনের মাধ্যমে জানাগেছে তিনি বর্তমানে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আছেন। খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. সুজিত অধিকারী জানান, শুনেছি নবগঠিত পাইকগাছা উপজেলা ও পৌরসভা ছাত্রলীগের কমিটির সদস্যরা আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান। তাদের হাত ধরেই ছাত্রলীগ আরো সুসংগঠিত হবে। আমি তাদের সার্বিক মঙ্গল কামনা করি। জামায়াত ও বিএনপি পরিবারের সন্তানদের কমিটিতে কোনভাবে স্থান হবেনা। খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার প্রেম কুমার মন্ডল বলেন, আমার জানামতে পাইকগাছা উপজেলা ও পৌরসভার নবগঠিত ছাত্রলীগের কমিটি সকল সদস্য ত্যাগী আওয়ামী লীগ নেতাদের সন্তান। বহু বছর পর এমন সুন্দর কমিটি উপহার দিলো জেলা ছাত্রলীগ। আমি সকলকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক শেখ রাশেদুজ্জামান রাসেল জানান, সদ্য ঘোষিত কমিটির ছাত্রলীগ নেতারা তাদের যোগ্যতার পুরস্কার পেয়েছেন। জেনেছি কমিটির সদস্যরা আওয়ামী পরিবারের সন্তান। জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ডা. শেখ শহীদ উল্লাহ নবগঠিত ছাত্রলীগের কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে নিজের ফেসবুক আইডিতে ছবি সহ পোষ্ট করেছেন। খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক খায়রুল আলম জানান, আমি নিজেও ছাত্রলীগ থেকে উঠে এসেছি। পাইকগাছা উপজেলা ও পৌরসভা ছাত্রলীগের কমিটি দেখে বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে জেনেছি খুব ভাল একটা ছাত্রলীগের কমিটি উপহার দিয়েছে জেলা ছাত্রলীগ। আমি নবগঠিত কমিটির সদস্যদের অভিনন্দন জানাই। জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শেখ মনিরুল ইসলাম বলেন, জামায়াত ও বিএনপি পরিবারের কোনো ছেলে কমিটে স্থান না পাওয়ায় সকল ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। জেলা আওয়ামী লীগের আরো এক সদস্য শেখ আনিসুর রহমান মুক্ত তিনি নবগঠিত কমিটি নেতৃবৃন্দকে অভিনন্দন জানিয়ে ফেসবুকের অনেক পোষ্টে কমেন্ট করেছেন। পাইকগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ কামরুল হাসান টিপু জানান, বহু বছর পর পাইকগাছা উপজেলা ও পৌরসভা ছাত্রলীগের নিখুঁত কমিটি উপহার দিয়েছেন খুলনা জেলা ছাত্রলীগ। নব নির্বাচিত ছাত্রলীগ নেতাদের অভিনন্দন জানাচ্ছি। তাদের হাত ধরে ছাত্রলীগ সংগঠনটি আরো গতিশীল হবে বলে বিশ্বাস করি কারণ আমার জানামতে সকল সদস্য আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান। এদিকে নবগঠিত কমিটি বাতিলের দাবী ও অবাঞ্চিত ঘোষণা করে পদবঞ্চিতরা বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। শুক্রবার বিকেলে পৌরসভা সহ বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আগত হাজারো বিক্ষুব্দ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল করে বাজার চৌরাস্তা মোড়ে এসে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। উপজেলা ছাত্রলীগের বিদায়ী সাধারন সম্পাদক তানজিম মোস্তাফিজ বাচ্চুর সভাপতিত্বে ও সদ্য বিলুপ্ত পৌর ছাত্রলীগ সম্পাদক রায়হান পারভেজ রনির পরিচালনায় এ প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা ছাত্রলীগ নেতা মাসুদুর রহমান মানিক। সমাবেশে সদ্য ঘোষিত উপজেলা কমিটির সহ-সভাপতি বাঁধন মন্ডল ও সাব্বির হোসেন পদত্যাগের ঘোষণা দেন। জেলা, উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের বিক্ষুব্দ ও পদবঞ্চিত নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন সম্মেলন না করে ৯ ডিসেম্বর জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মো. পারভেজ হাওলাদার ও সম্পাদক ইমরান হোসেন প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে রাতের আঁধারে অর্থের বিনিময়ে অছাত্র, বিবাহিত, মাদকাসক্ত ও জামাত পরিবারের সদস্যদের উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের পকেট কমিটি করেছেন। সমাবেশ থেকে এ কমিটি বাতিল ও অবাঞ্চিত ঘোষণা করে বিক্ষুব্দ নেতা-কর্মীরা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সমাবেশে জেলা উপজেলা ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আমিনুল হক বাদল, শেখ শাকিল আহম্মেদ, রমজান সরদার, আজমল হোসেন বাবু, ইমরান মোল্লা, রাসেদুজ্জামান রাসেল, বাঁধন মন্ডল, সাব্বির হোসেন, শেখ বাপ্পি, জি এম কাদের, শাহেনশাহ বাদশা, সাইফুল ইসলাম, দ্বীপায়ন বিশ্বাস, ফয়সাল আহম্মেদ, দিদারুল ইসলাম, নাহিদ হাসান বাবু, সৌরভ গাইন, আ. রহিম, রাসেল সরদার, রসুল, তুহিন, সবিজ, ফিরোজ, আব্দুল্লাহ, মাজাহারুল, রাসেল, নাজমুন, মাসুদুর, মিরাজুল, সৌমিত্র, দুর্জয়, বঙ্কেশ, দোলোয়ার, আবু রায়হান, অঙ্কয়, নিরুপন, ইয়াসির, শাকিব, মুক্ত, রিয়াদ হোসেন। পদবঞ্চিতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে অধিকাংশই বিবাহীত, ব্যবসায়ী ও নারীকেঙ্কারীসহ অন্যদলের পরিবারের সদস্য।