অবশেষে সড়কের ৮ ইঞ্চি উচ্চতার সিসি ঢালাই কেটে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। গত রোববার রাত থেকে সরাইল অন্নদা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের মোড়ে এ কাজ শুরূ হয়েছে। কাজটি সম্পন্ন হলে দ্রƒত পানি নিস্কাশন হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে ৪ ফুট প্রস্থের সড়কের এ জায়গাটি কাটতে খরচ হচ্ছে ১৫ হাজার টাকা। দিনে রাতে কাজ চলায় সড়কে যানজট লেগে যাচ্ছে প্রতিক্ষণে। অথচ সড়কে ঢালাইয়ের কাজ শুরূ করার সময় পানি নিস্কাশনের জন্য এমন একটি কালভার্ট বা অধিক প্রস্থের পাইপ মাটির নীচে আড়াআড়ি ভাবে দেওয়ার দাবী জানিয়েছিল স্থানীয় লোকজন। এ দাবী বাস্তবায়নে তখন সাধারণ লোকজন মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করেছিল। তখন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে নেননি।
সরজমিনে ভুক্তভোগী পথচারী ও স্থানীয় লোকজন সূত্র জানায়, দীর্ঘ জন দূর্ভোগের পর ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন এমপি জিয়াউল হক মৃধার সময়ে অন্নদা স্কুলের মোড় থেকে ঠাকুর বাড়ির পর্যন্ত সড়কটিতে সিসি ঢালাইয়ের কাজ হয়। তখন ড্রেনেজ ও পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা স্থায়ী ভাবে করতে অনেক চেষ্টা করেছেন স্থানীয় বাসিন্ধারা। এমনকি তারা আবেদনপত্রও দিয়েছেন। করেছেন মানববন্ধনও। অবৈধ দখলদারদের তখন উচ্ছেদ করার দাবীও ওঠেছিল। কিন্তু কোন কিছুই হয়নি। দখলদাররাও থাকেন বহাল তবিয়তে। কোন রকমে সড়কে ঢালাইয়ের কাজ করে যান কর্তৃপক্ষ। পানি নিস্কাশনের জন্য অন্নদার মোড়ে কোন রকমে ৬-৮ ইঞ্চি প্রস্থের একটি প্লাষ্টিক পাইপ দেওয়া হয়। এ পাইপের অপর পাশে মার্কেট সংলগ্ন স্থানে একটি বক্স করা হয়। বক্সের পাশটি ড্রেনের পাশ থেকে উঁচু হয়ে যায়। ফলে বৃষ্টি হলে পুরো বিকাল বাজার, অন্নদা উচ্চবিদ্যালয় ও সড়কের পানি এ পাইপ দিয়ে নিস্কাশিত হয় খুবই ধীর গতিতে। মূহুর্তের মধ্যে সড়কে লেগে যায় হাঁটু পানি। একসময় এই পানি অন্নদা স্কুলের প্রধান ফটক পেরিয়ে চলে যায় মাঠের ফটক পর্যন্ত। দূর্ভোগ বেড়ে যায় পথচারী ও শিক্ষার্থীদের। দুর্ভোগের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়। বিশেষ ব্যবস্থায় ১০ মিনিটের মধ্যে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করেন কর্তৃপক্ষ। গত ৮ ডিসেম্বর দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় ‘সরাইলে সড়কে হাঁটু পানি, দুর্ভোগ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। মন গলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। এরপরই এগিয়ে আসেন তারা। এখানে ২০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪ ফুট প্রস্থের একটি কালভার্ট নির্মাণের জন্য দ্রƒত ৪ লক্ষাধিক টাকার ইষ্টিমিট হয়েছে। গত ১২ ডিসেম্বর রোববার থেকে শুরূ হয়েছে কালভার্ট নির্মাণের কাজ। ঢালাইয়ের কাজে ব্যবহারের জন্য সড়কের আগের ঢালাইয়ের মালামাল মেশিনে টুকরা করা হয়েছে। দ্রƒত গতিতে চলছে কাজ। তবে উচ্চমাধ্যমিকপরীক্ষার্থী ও পথচারীদের সাময়িক সমস্যা হচ্ছে। নিয়মিত যানজট লেগে যাচ্ছে অন্নদার প্রধান ফটকে। স্থানীয় বাসিন্ধা ও সমাজসেবক রওশন আলী বলেন, এ মোড়ে মাটির নীচে বিশাল বড় একটি ড্রেনেজ ব্যবস্থা রয়েছে। ওই ড্রেনের ভেতর দিয়ে লোকজন হাঁতে পারত। অবৈধ দখলদাররা ওই ড্রেনটির আশপাশের সরকারি জায়গা দখল করে বিকাল বাজারের পানি নিস্কাশন বন্ধ করে দিয়েছে। রহস্যজনক কারণে দখল উচ্ছেদ করছেন না কর্তৃপক্ষ। এ সড়কে ঢালাইয়ের কাজের সময়ও একটি কালভার্ট করার দাবীতে আন্দোলন করেছি। তখনও হয়নি। এখন ঢালাই করা রাস্তাটি কাটতে হচ্ছে। সরকারের অতিরিক্ত অর্থ খরচ হচ্ছে। আর জনগণ সাময়িক কষ্ট ভোগ করছেন। লাভ হচ্ছে কার? উপজেলা প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মোছা: নিলুফা ইয়াছমীন বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও মহোদয়ের সম্পৃক্ততায় দ্রƒত এ কাজের ব্যবস্থা করেছি। বাজেট ৪ লাখ টাকার ওপরে। ভালমানের নতুন মালামাল দিয়ে কাজ হওয়ার কথা। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আরিফুল হক মৃদুল বলেন, কালভার্টের কাজ সম্পর্কে আমার জানা নেই। আমার দফতরের সহায়তায় হচ্ছে এমনটাও সঠিক নয়। তবে কয়েকদিন পূর্বে সড়কে পানি জমে থাকার কথা শুনেছি।