১৪ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত পাবনার সুজানগর হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ওই দিনে পাকসেনারা স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে সম্মুখ যুদ্ধে পরাজিত হলে সুজানগর হানাদার মুক্ত হয়। এরপর দেশমাতৃকার শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলা সদরে বাঙালির বহুকাঙ্খিত লাল-সবুজের স্মৃতিগাঁথা বিজয়ের পতাকা উত্তোলন করেন। বিশিষ্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মজিদ সরদার জানান, ১৯৭১সালে পাকসেনারা তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর ও আল-শামসদের সহায়তায় উপজেলার নাজিরগঞ্জ, শ্যামনগর, সাতবাড়ীয়া, নারুহাটি, খারপাড়া, তাঁতীবন্দ এবং সুজানগর উপজেলা সদরে হামলা চালিয়ে খুন, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের পাশা-পাশি লুটপাট চালায়। এরই একপর্যায়ে ভারতের প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা এবং উপজেলার মুক্তিকামী সাধারণ মানুষ পাকসেনাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। মুক্তিযোদ্ধারা নাজিরগঞ্জ এবং তাঁতীবন্দসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাকসেনাদের ওপর হামলা চালিয়ে পরাজিত করে। তবে হানাদার বাহিনী বিভিন্ন স্থানে পরাজিত হলেও তৎকালীন সুজানগর পুলিশ স্টেশন দখল ছাড়েনা। তারা পুলিশ স্টেশনে অবস্থান নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে হত্যাযজ্ঞ, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাট অব্যাহত রাখে। তবে ১১ডিসেম্বর স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা তথা যুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল হোসেন, জহুরুল ইসলাম বিশু এবং ইব্রাহীম মোস্তফা কামাল দুলালের নেতৃত্বে ওই পুলিশ স্টেশনে আক্রমণ চালায়। তিনদিন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের একপর্যায়ে ১৪ডিসেম্বর পাকসেনারা আত্মসমর্পণ করলে সুজানগর হানাদার মুক্ত হয়। যুদ্ধে ইব্রাহীম মোস্তফা কামাল দুলাল, আবু বকর ও নূরুল ইসলাম শহীদ হন এবং জহুরুল ইসলাম বিশু ও সাইদুর রহমান সাইদ পাকিস্তান হানাদারদের গুলিতে আহত হন। এদের মধ্যে সাইদুর রহমান সাইদ গুলিতে অন্ধত্ব বরণ করেন।