বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বিভাগীয় শহর রাজশাহীতেও শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে। এর আগে দিনটি উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই ফুলে ফুলে ভরে ওঠে রাজশাহীর শহীদ স্মৃতিসৌধগুলো। রাজনৈতিক দলগুলের পাশাপাশি সরকারি কর্মকর্তা এবং সাধারণ মানুষও পুষ্পার্ঘ অর্পণের মধ্য দিয়ে এদিন শহীদ বুদ্ধিজীবীদের বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন। দিবসটি উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার সকালে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনে পক্ষে প্যানেল মেয়র-১ শরিফুল ইসলাম বাবুর নেতৃত্বে কাউন্সিলরগণ রাজশাহী মহানগরীর টি-গ্রোয়েন এলাকায় বাবলাবন বধ্যভূমিতে থাকা স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর অন্যারা এই বধ্যভূমির স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে মঙ্গলবার সকাল ৯টায় রাজশাহী কোর্ট চত্বর শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. হুমায়ুুন কবীর, রাজশাহী জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আবদুল জলিল, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) কমিশনার মো. আবু কালাম সিদ্দিক ও রাজশাহী পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ হোসেন।
এরপর সকাল সাড়ে দশ’টায় রাজশাহী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জতীয় জীবনে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসের গুরুত্ব, তাৎপর্য ও মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের অবদান তুলে ধরে বিশদ আলোচনা করা হয়।
রাজশাহীর জেলা প্রশাসক মো. আবদুল জলিলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. হুমায়ুন কবীর। বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার মো. আবু কালাম সিদ্দিক।
এদিকে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়েছে। এদিন সূর্যদয়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসন, আবাসিক হল ও অন্যান্য ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতভাবে উত্তোলন করা হয়। এরপর সকাল সাড়ে ৭টায় মৌন মিছিল নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য প্রফেসর গোলাম সাব্বির সাত্তার তাপুর নেতৃত্বে রাবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করে।
অন্যদিকে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েও (রুয়েট) যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়েছে। দিবসের প্রথম প্রহরে রুয়েট উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রফিকুল ইসলাম সেখের নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধে রুয়েটের শহীদদের সমাধিস্থলে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়। এরপর শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। পরে দোয়া করে এবং মোমবাতি প্রজ্বলনের মধ্য দিয়ে প্রথম প্রহরের কর্মসূচি শেষ হয়। পরে বাদ যোহর রুয়েট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।