করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন আক্রান্ত সংক্রমিত হয়ে কেউ মারা যাননি বলে সবাই জানলেও যুক্তরাজ্যে ওমিক্রন আক্রান্ত হয়ে একজন মারা গেছেন বলে সেদেশের খোদ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন জানিয়েছেন। -পাকিস্তানের করাচি শহরে একজন ওমিক্রন সনাক্ত হয়েছেন। অন্যদিকে জিম্বাবুয়ে ফেরত বাংলাদেশের দু’জন নারী ক্রিকেটারের শরীরে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। তাদের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। তবে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ অনেকটা কমে এলেও গত এক সপ্তাহে আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যু বেড়েছে। গত ৬ থেকে ১২ ডিসেম্বর এক সপ্তাহে দেশে নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৮৮২ জন। আর মারা গেছেন ২৭ জন। আগের সপ্তাহ ২৯ নভেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল ১ হাজার ৬৫৯ জন আর মারা যান ২৩ জন।
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে দীর্ঘ লক ডাউন শেষে সব কিছু স্বাভাবিক হতে চলেছে। কিন্তু এর মাঝে হঠাৎ সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এবং নতুন ধরন ওমিক্রন ব্যাপক সংক্রমণ ক্ষমতা জেনে সবার মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৩ ডিসেম্বর মন্ত্রীপরিষদ বৈঠকে ওমিক্রন নিয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। এজন্য বুস্টার ডোজ দেওয়ারও নির্দেশনা দেন তিনি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনা ভাইরাসের বুস্টার ডোজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এখন যারা ষাটোর্ধ বয়সের ব্যক্তি ও সম্মুখ সারির (ফ্রন্ট লাইনার) কর্মীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ টিকা দেয়া হবে। আশা করা যাচ্ছে এ মাসের মধ্যেই ডোজ দেয়া সম্ভব হবে।
করোনা থেকে বাঁচার উপায় টিকা গ্রহণ এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। সরকার জনগণের সুরক্ষার জন্য দেশব্যাপী কিশোর থেকে শুরু করে বয়স্ক ব্যক্তিদের টিকাদান কর্মসূচি পরিচালিত করছে। এ পর্যন্ত ১১ কোটি ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। এ মাসের মধ্যে আরো দু’কোটি ডোজ টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা আছে। সরকার চাইছে, দেশের সিংহভাগ মানুষকে টিকার আওতায় আনা। কিন্তু বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার গতি খুব ধীর। তাদের ফাইজারের টিকা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু দেশের সব জায়গায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা না থাকায় টিকাদানে গতি আসছেনা। যেসব জায়গায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রয়েছে, সেসব জায়গায় যথাযথভাবে টিকা দান কার্যক্রম চলছে। সব ঠিক থাকলে শিক্ষার্থীদের মাঝে টিকা দেওয়ার গতি আরো বাড়বে।
দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেশের অধিকাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনার পরও সংক্রমণের আশঙ্কা থেকে যায় বলে মনে করেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাই স্বাস্থ্য বিধি মেনে মাস্ক ব্যবহার করে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলাচল আবশ্যক। এজন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। নিজেকে সুরক্ষিত হতে হবে। অন্যকেও সুরক্ষিত রাখতে হবে। ওমিক্রন দ্রুত সংক্রমনশীল হলেও এতে আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যায়নি বলা হলেও এখন এ ধরন প্রাণহানির কারণ হয়ে উঠেছে। তাই সাবধানতার কোনো বিকল্প নেই।