প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন গ্রাম হবে শহর। সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ‘শেখ হাসিনার দর্শন বাংলাদেশের উন্নয়ন’ শ্লোগান বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে আসছেন।
স্বাধীনতার সুর্বণজয়ন্তীতে বরিশাল বিভাগে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন শতভাগ বাস্তবায়নের বিশেষ অনুসন্ধান করেছে জনকণ্ঠ। সেই অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে দুটি উপজেলার নাম। যেখানকার সব সেক্টরে ব্যাপক উন্নয়নের জোয়ার বইছে। বরিশাল বিভাগের রাজাপুর ও কাঠালিয়া উপজেলার রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, বিদ্য্যুৎ, নৌ-যোগাযোগ, কর্মসংস্থান, সাধারণ মানুষের জীবনমানের উন্নয়নসহ গোটা সেক্টরে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।
উন্নয়ন বিশ্লেষকদের মতে, বিভাগের মধ্যে সবদিক বিবেচনা করে ওই দুই উপজেলার প্রতিটি গ্রাম এখন শহরে রূপান্তরিত হয়েছে। যেখানে উন্নয়নের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন শতভাগ বাস্তবায়িত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করেছেন রাজাপুর-কাঠালিয়া সংসদীয় আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই আসনটি একসময় বিএনপির দখলে ছিল। ২০০৮ সালে বজলুল হক হারুন আসনটি পুনরুদ্ধার করেন। এরপর তিনি টানা তিনবার ওই আসন থেকে সংসদ সদস্য নিবাচিত হন। এরপর থেকেই দীর্ঘদিনের ভাগ্যবঞ্চিত রাজাপুর-কাঠালিয়া উপজেলার উন্নয়নের চিত্র পাল্টে যেতে শুরু করে। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতায় সাংসদ হারুন তার নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। ফলে একসময়ের অবহেলিত রাজাপুর ও কাঠালিয়া উপজেলার অতীত চিত্র পাল্টে যায়।
সূত্রে আরও জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন গ্রাম হবে শহর। এ ঘোষণার পর থেকেই সাংসদ বজলুল হক হারুন তার নির্বাচনী এলাকার অসম্পন্ন কাজগুলো তড়িৎগতিতে সম্পন্নের জন্য সংশ্লিষ্টদের চাঁপপ্রয়োগ করেন। যেকারণে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন ‘গ্রাম হবে শহর’ বরিশাল বিভাগের মধ্যে সর্বপ্রথম শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে রাজাপুর ও কাঠালিয়া উপজেলায়। ওই দুই উপজেলার সর্বত্র এখন উন্নয়নের জোয়ার বইছে।
সংশ্লিষ্ট বরিশাল বিভাগীয় অফিসের নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে ১১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে রাজাপুর-কাঠালিয়া ও আমুয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মান, আমুয়াতে সেতু নির্মাণ, দুই উপজেলায় দুটি কলেজ সরকারীকরন, শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বহুতল ভবন নির্মাণ, অর্ধশতাধিক সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ, মডেল মসজিদ নির্মাণ, শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপন, কচুয়া-বেতাগী পয়েন্টের বিশখালী নদীতে ফেরী সংযোগ, আধুনিক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ, কমিউনিটি ক্লিনিক, উপজেলা প্রশাসনিক ভবন, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, দুই উপজেলায় অর্ধ শতাধিক টেকসই সেতু নির্মাণসহ বিদ্যুৎ, কৃষি ও স্বাস্থ্যখাতে ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। বর্তমানে ওই দুই উপজেলায় আরো কয়েকটি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে।
পরিকল্পিত রাস্তা নির্মাণ ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনা মোতাবেক গ্রামকে শহরে পরিনত করার জন্য গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে রাজাপুর থেকে কাঠালিয়ার আমুয়া পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়া বিগত কয়েক বছরে দুই উপজেলায় প্রায় দুইশ’ কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা পাকাকরন করা হয়েছে। ফলে এ অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় সৃষ্টি হয়েছে নতুন দিগন্ত।
ব্রীজ ও কালভার্ট নির্মাণ ॥ আমুয়া সেতু না থাকায় কাঠালিয়া উপজেলার পাশ্ববর্তী বামনা ও পাথরঘাটা উপজেলার মানুষকে যোগাযোগে ব্যাপক দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতায় এমপি হারুন আপ্রাণ চেষ্ঠা চালিয়ে ৩৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে আমুয়া সেতু নির্মাণ করেছেন। ফলে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ সারাদেশের সাথে দক্ষিণাঞ্চলবাসীর যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। এছাড়াও ইতোমধ্যে শতাধিক ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মান করে এমপি হারুন ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা বাস্তবায়ন ॥ করোনার মোকাবেলায় জনপ্রতিনিধিদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা বাস্তবায়নে সাংসদ বজলুল হক হারুন কর্মহীন মানুষের মাঝে কয়েক দফায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ, স্বাস্থ্য কর্মীদের মাঝে সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণসহ হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেন সিলিন্ডার বিতরণ করেছেন।
শিক্ষাখাতে উন্নয়ন ॥ শিক্ষার মানকে উন্নত করার জন্য শিক্ষা বান্ধব সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালে রাজাপুর ও কাঠালিয়া উপজেলার দুটি কলেজ ও দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় জাতীয়করনের ঘোষনা করেছেন। যার ফলে গ্রামের শিক্ষার্থীরা সরকারী কলেজ ও স্কুলে বাড়তি সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে। এসব প্রতিষ্ঠান জাতীকরনের ক্ষেত্রেও সাংসদ হারুনের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। সাংসদের হস্তক্ষেপে দুই উপজেলার সরকারী এ কলেজ দুটিতে পাঁচ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ব্যয়ে চারতলা বিশিষ্ট নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। একসময়ের কাঠালিয়ার অবহেলিত মনস্বিতা মহিলা ডিগ্রি কলেজে চারতলা ভবন নির্মাণ ও এমপিওভূক্তকরন করা হয়। এ ছাড়া দুই উপজেলার শতাধিক মাদ্রাসা, মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বহুতল পাঁকা ভবন নির্মাণ করাসহ কয়েকটি মাদ্রাসা ও কলেজ এমপিওভুক্ত হয়েছে।
স্বাস্থ্যখাতে উন্নয়ন ॥ দুই উপজেলায় ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নতুন আধুনিক ভবন নির্মাণ। নার্স ও ডাক্তারদের জন্য কাঠালিয়ায় পৃথক দুটি ডরমেটরি ভবন ও বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবন নির্মান করা হয়েছে। অতিসম্প্রতি বজলুল হক হারুন রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অপারেশন থিয়েটার ও নতুন এ্যাম্বুলেন্সের উদ্বোধন করেছেন। হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পর সর্বপ্রথম সাংসদ বজলুল হক হারুনের হস্তক্ষেপে অপারেশন থিয়েটার চালু করা হয়েছে।
সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণ ॥ উপকূলীয় অঞ্চলে সিডরের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলোচ্ছ্বাসের হাত থেকে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় দেওয়ার জন্য সাংসদ হারুনের হস্তক্ষেপে দুই উপজেলায় অর্ধশতাধিক সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করা হয়েছে। মডেল মসজিদ নির্মাণ ॥ ধর্মপ্রান মুসলমানদের জন্য প্রথমধাপে রাজাপুর উপজেলা সদরে ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মান করা হয়েছে আধুনিকমানের মডেল মসজিদ।
ছৈলারচর উন্নয়ন ॥ দক্ষিণাঞ্চলের পর্যটন শিল্পে এখন আলোচনার শীর্ষে রয়েছে মিনি সুন্দরবনখ্যাত কাঠালিয়ার ছৈলারচর। বিষখালী নদীর তীরে জেগে ওঠা ছৈলারচর পরিণত হয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমিতে। এখানে রয়েছে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা। স্থানীয় প্রশাসন ছৈলারচরকে পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষনীয় করে তুলতে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। ইতোমধ্যে মানবতার ফেরিওয়ালাখ্যাত স্থানীয় সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুনের সহযোগিতায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুফল চন্দ্র গোলদারের হস্তক্ষেপে ছৈলারচরে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুন জনকন্ঠকে বলেন, জনপ্রতিনিধিরা জনগণের সেবক। জনগণের সেবা করার জন্য মানবতার মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছিলেন। সেই থেকে এলাকার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা ছিলো গ্রাম হবে শহর। এ ঘোষনাটি সর্বপ্রথম রাজাপুর ও কাঠালিয়ায় বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন পূরণ করতে দুই উপজেলায় কয়েক হাজার কোটি টাকার উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে আমাকে দলের মধ্যে অনুপ্রবেশকারীদের চক্ষুশুল হতে হয়েছে। তারপরেও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বরিশালের বিভাগের মধ্যে সর্বপ্রথম রাজাপুর ও কাঠালিয়া উপজেলার প্রতিটি গ্রামকে উন্নয়নের শিখরে নিয়ে শহরে রূপান্তরিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পেরেছি, এটাই আমার জীবনের স্বার্থকতা।