রংপুরে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা এবং বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে মহান বিজয় দিবস ও বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী পালিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রংপুর স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসন আয়োজিত বিশেষ কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে পরিবেশন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে বীর মুক্তিযোদ্ধা, পুলিশ, আনসার ভিডিপি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, কারারক্ষী, বিএনসিবি, রোভার স্কাউট, রেড ক্রিসেন্ট, স্কাউটসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এবং শিশু-কিশোর সংগঠন কুচকাওয়াজে অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল ওয়াহাব ভূঞা। সম্মানিত অতিথি ছিলেন রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। অনুষ্ঠানে রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশের রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য্য, মহানগর পুলিশ কমিশনার আবদুল আলীম মাহমুদ, রংপুর জেলার পুলিশ সুপার মো. ফেরদৌস আলী চৌধুরী, রংপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহবুব রহমান প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রেখে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নময় সোনার বাংলা গড়তে সবাইকে নিজ নিজ জায়গা থেকে কাজ করতে হবে। দেশ এগিয়ে নিতে অন্যায়, অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে। বঙ্গবন্ধুসহ সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ ও বীরঙ্গনাদের ঋণ আমরা কোনোদিনও শোধ করতে পারব না। তাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে উন্নত, সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার সোনার বাংলা গড়তে তরুণ সমাজসহ আগামী প্রজন্মকে দায়িত্বশীল হতে হবে।
এর আগে সকাল সাড়ে নয়টায় শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সম্মানিত অতিথিরা। পরে মহান বিজয়ের দিবসের শুভেচ্ছা বক্তৃতা শেষে অভিভাদন মঞ্চ থেকে কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে পরিবেশনা উপভোগ করেন তারা। এ সময় পুরো স্টেডিয়ামের গ্যালারীতে বিভিন্ন বয়সী মানুষের উপচে পড়া ছিল।
এর আগে ভোরে রংপুর নগরীর মর্ডাণ মোড়ে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ অর্জন এ ৫০ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের শুভ সূচনা হয়। পরে মর্ডান মোড়ে অর্জন, ডিসির মোড়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, কালেক্টরেট সুরভি উদ্যানে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নাম সম্বলিত স্মৃতিস্তম্ভে সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন পুষ্পস্তবক করেন।
দিবসের প্রথম প্রহরে রাত ১২টা এক মিনিট থেকে রংপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণে শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সকাল থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন ছাড়াও ছোট-বড় সব বয়সী মানুষের ফুলেল শ্রদ্ধায় ভরে যায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, শহীদ মিনার, স্মৃতিসৌধ্য ও স্মৃতিস্তম্ভগুলো।
এদিকে, দুপুরে রংপুর নগরীতে মুজিব শতবর্ষ ও বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতে আনন্দ শোভাযাত্রা বের করে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ সহযোগি সংগঠনগুলো। এ ছাড়া বিএনপি, মহানগর জাতীয় পার্টি, জেলা জাতীয় পাটি জাসদ, বাসদ, ওয়াকার্স পার্টি, কমিউনিষ্ট পার্টি, ছাত্র ইউনিয়ন, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদ, রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতি ,বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন রংপুর.সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন দিবসটি নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপন করছে।
দুপুর সাড়ে বারোটায় রংপুর টাউন হলে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। এছাড়াও নগরীসহ জেলার বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও মাদরাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলোচনা সভা, শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও খেলাধুলার আয়োজন করা হয়েছে।