রংপুরের পীরগঞ্জে দু’স্ত্রীকে ফেলে রেখে এক কলেজ পড়-য়া ছাত্রীকে নিয়ে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছে রাশেদুল ইসলাম ইমন (৩২) নামের এক লম্পট প্রকৃতির যুবক। সে উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের বড় ফলিয়া গ্রামের সাজু খাঁ’র পুত্র। তার দু’স্ত্রী ছাড়াও ২ পুত্র সন্তানও রয়েছে। এ ঘটনায় রাশেদুল ইসলাম ইমনের বিরুদ্ধে তার ২য় স্ত্রী লাবনী বেগম ও কলেজ ছাত্রীর পিতা আবুল কাশেম পীরগঞ্জ থানায় পৃথক পৃথক দু’টি লিখিত অভিযোগ করেছেন। সোমবার সকালে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী জানায়, রাশেদুল ইসলাম ইমন নিজকে পুলিশের সোর্স দাবি করে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় নানা ধরণের অপকর্ম করে আসছে। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে মিথ্যা মামলায় জড়ানোসহ নানা ভয়-ভীতি দেখাতো। সে প্রায় বছর পাঁচেক পূর্বে বরিশালে আছমা বেগম নামের এক তরুণীকে প্রথম বিয়ে করে। বিয়ের ৩ বছর যেতেই এক পুত্র সন্তানসহ আছমাকে শারিরীক নির্যাতন চালিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। এদিকে রাশেদুল ইসলাম ইমনের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে প্রতিবেশী হতদরিদ্র ভ্যানচালক লাল মিয়ার সুন্দরী চক্ষু প্রতিবন্ধী ষোড়শী কন্যা লাবনী খাতুনের উপর। তাকে নানা ভাবে ফুসলিয়ে প্রায় ২ বছর পূর্বে বাড়ি সংলগ্ন আখক্ষেতে ডেকে নিয়ে বলপূর্বক ধর্ষণ করে। বিষয়টি জানাজানি হলে গ্রামের লোকজন উভয় পরিবারের সম্মতিতে এদের বিয়ে দেয়। বিয়ের পর থেকেই লাবনী’র উপর চলতে অবর্ণনীয় শারিরীক ও মানষিক নির্যাতন। চক্ষু প্রতিবন্ধী হলেও লাবনী সংসারের সকল কাজেই করতে পারতো। এমনকি তাকে দিয়ে জমির ধান কাটা-মাড়াইয়ে কাজও করাতো রাশেদুল। সংসার টেকাতে লাবনীও কলুর বলদের মত সব কাজেই করতো। এতেও মন গলেনি পাষন্ড স্বামীর। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রায় প্রতিদিনেই শারিরীক নির্যাতন চলতো তার উপর। এরইমধ্যে লাবনী ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি রাশেদুল জানার পর থেকেই পেটের বাচ্চা নষ্টের জন্য লাবনীকে চাপ দিতে থাকে। লাবনী এতে অস্বীকৃতি জানালে রাশেদুল নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। একপর্যায়ে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে লাবনী তার অসহায় বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। প্রায় দেড় মাস পূর্বে লাবনী একটি ফুটফুটে পুত্র সন্তান প্রসব করে। ভরণ-পোষন তো নয়ই এমনকি রাশেদুল তার স্ত্রী-পুত্রকে দেখতেও আসেনি। লাবনী জানায়, আমরা গরীব মানুষ। টাকা-পয়সার অভাবে মামলা মোকদ্দমায় যেতে পারছিনা। তবে পীরগঞ্জ থানায় গত ১৭ ডিসেম্বর রাশেদুলের বিরুদ্ধে ১টি লিখিত অভিযোগ করেছি। অপর দিকে গত শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে একই গ্রামের (বড় ফলিয়া) প্রতিবেশী আবুল কাশেম মিয়ার কলেজ পড়-য়া কন্যা স্বপ্না বেগম বাড়ি সংলগ্ন আখক্ষেতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গেলে পূর্ব থেকে ওঁতপেতে থাকা লম্পট রাশেদুল স্বপ্নাকে বলপূর্বক ধর্ষণ করে। এ ঘটনা প্রতিবেশী ৩ মহিলা দেখতে পেয়ে স্বপ্নার পরিবারকে জানায়। এ নিয়ে স্বপ্নার বাবা-মা তাকে গাল-মন্দ করলে স্বপ্না ঐদিন সন্ধ্যায় ধর্ষক রাশেদুলের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। ঘটনা এলাকায় জানাজানি হবার পর ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীর ভয়ে রাশেদুল গা ঢাকা দেয়। একপর্যায়ে গভীর রাতে সকলের অজান্তে রাশেদুল কলেজছাত্রী স্বপ্নাকে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায়। এ ব্যাপারে স্বপ্নার বাবা আবুল কাশেম মিয়া বাদী হয়ে একই দিনে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। এ ব্যাপারে সাব-ইন্সপেক্টর জামিউল ইসলাম দুটি অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে বলেন, আমি অদ্যই অভিযোগ দুটি তদন্তে যাব। রাশেদুল পুলিশের সোর্স কি না ? এ প্রশ্নের কোন জবাব দেননি তিনি।