মহাসড়কে সিএসজি চালিত অটোরিকশার চলাচলের উপর সরকার নিষেধাজ্ঞা জারী করেছেন অনেক আগেই। নিষেধাজ্ঞা দেশের বিভিন্ন স্থানে মানলেও শুরূ থেকেই মানছেন না সরাইল এলাকার কিছু মালিক ও চালক। তবে জেলা শহরের সাথে দুটি উপজেলার যোগাযোগ ঠিক রাখতে মালিক ও শ্রমিক সমিতির অনুরোধে কুট্রাপাড়া ব্রীজ থেকে মহাসড়কের একটি অংশে নিষেধাজ্ঞা শিথিল রেখেছেন স্থানীয় প্রশাসন। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে অন্য দুইদিকে মহাসড়কে দেদারছে চলছে অটোরিকশা। ফায়দা লুটছে এক শ্রেণির দালাল ও কথিত সাংবাদিক। আর সড়কে মাঝে মধ্যে ঘটছে দূর্ঘনায় প্রানহানি। অনেককে বরণ করতে হচ্ছে স্থায়ী পঙ্গুত্ব। মেহেদীর রং মুছার আগেই অনেক নারীকে পড়তে হচ্ছে বিধবার শাড়ি। গত শুক্রবার ভোরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শাহবাজপুর বৈশামুড়া এলাকায় মর্মান্তিক এক দূর্ঘটনায় অটোরিকশা যাত্রী মো. জাহাঙ্গীর মিয়া (৩৫), মাহফুজ মিয়া (৩২) ও আমজাদ আলী (৩০) নামের তিন ইটভাটা শ্রমিক ঘটনাস্থলেই মারা যায়। গুরূতর আহত হন খেজুর মিয়া (৪৫) ও কামাল মিয়া (৪০)। সকলের বাড়ি শাহবাজপুর গ্রামে। এরপর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মহাসড়কে অটোরিকশা চলাচলের উপর প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় গণমাধ্যমে। নাড়া পড়ে যায় সংশ্লিষ্ট দফতরে। গত ২-৩ দিন ধরে মহাসড়কে চলছে হাইওয়ে পুলিশের অভিযান। সেই ছবি ভাইরাল হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এতকিছুর পর মহাসড়কের সরাইল এলাকায় এখনো বেশকিছু অটোরিকশা চলছে দাপটের সাথে। অটোরিকশার একাংশের মালিক ও চালকের প্রশ্ন, এই অটোরিকশা গুলো কার?
বৃহস্পতিবার সরজমিনে দেখা যায়, ঘড়ির কাটায় সকাল ঠিক ১১টা। কুট্রাপাড়া মোড় থেকে পূর্ব দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে নিষেধাজ্ঞা অভিযান চলমান থাকায় অটোরিকশা চলাচল একেবারে বন্ধ থাকার কথা। কিন্তু না একদিকে হাইওয়ে পুলিশ সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। অপরদিকে মাঝে মধ্যেই চলছে অটোরিকশা। পুলিশ দেখে চালকরা কখনো মুখ কাল করে গতিতে টানছেন। আবার কখনো মুচকি হাঁসছেন। ১১টা ২০ মিনিট পর্যন্ত শাহবাজপুরের দিক থেকে বিশ্বরোড মোড়ের দিকে অন্তত: ৬-৭ টি যাত্রীবাহী অটোরিকশা আসতে দেখা যায়। আবার দুপুর ১ টার পর শাহবাজপুর এলাকা থেকে কুট্রাপাড়া মোড়ে ফেরার পথে দেখা যায় মহাসড়কে ৮-১০টি অটোরিকশা চলছে দেদারছে। খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার সামনে মহাসড়কের পাশে দেখা যায় একটি অটোরিকশা দাঁড়িয়ে আছে। আর একটু পরপর হাত উঁচিয়ে যাত্রীদের ডাকছেন। এ সময় হাইওয়ে থানার সামনে থেকে কথিত কতিপয় সাংবাদিককে উঁকিঝুঁকি মারতে দেখা গেছে। এমনই চিত্র চোখে পড়েছে মহাসড়কের বিশ্বরোড মোড় থেকে আশুগঞ্জ পর্যন্ত। তবে নিষেধাজ্ঞা ও অভিযানের কারণে যারা মহাসড়কে অটোরিকশা চালাতে পারছেন না। তারা ক্রমেই ক্ষুদ্ধ হচ্ছেন। সড়কে চলতে হবে। সদস্যায় পড়ে যাব। এমন সব ভেবে তারা মুখ খুলছেন না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক মালিক ও চালক বলেন, না চললে একটিও চলবে না। কিছু চলবে। অন্যরা চালাতে পারবে না। দুই ধরণের আইন করে গরীব চালকদের ঠকানো যাবে না। কিছু লোক নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে হাইওয়ে থানায় সারাদিন বসে থাকেন। আবার রয়েছে কতিপয় দালালও। এরাই তদবির করে কিছু অটোরিকশা সড়কে চালাচ্ছেন। খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজালাল আলম বলেন, অভিযোগ সঠিক নয়। অভিযান চলছে। এখন মহাসড়কে অটোরিকশা চলার কথা না। কেউ চালায় নাকি। ছবি থাকলে দিয়েন তো। দেখব ওরা কারা। আপনার দফতর নাকি এখন কথিত সাংবাদিকদের অফিস? এমন প্রশ্নের উত্তরে হেঁসে দেন তিনি (ওসি)।