ডিজিটাল এবং আধুৃনিক চিকিৎসার যুগেও বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার খড়মখালী গ্রামের ইমদাদুল ইসলাম নামে এক ভন্ড কবিরাজ চিকিৎসার নামে অপ-চিকিৎসায় সাধারণ মানুষদের সঙ্গে নানা ভাবে প্রতারনা করে চলেছেন। তার প্রতারনা ও অপ-চিকিৎসার ফলে উপজেলা ও তার বাহির থেকে আগত সাধারন নারী-পুরুষ আর্থিক ও শারীরিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
কথিত এই কবিরাজের ৪টি মোবাইল নাম্বার সংযুক্ত ছাপানো একটি প্রচারপত্রে দেখাগেছে, তিনি ডায়াবেটিস,নালি বা গ্যাংরিন, পচন রোগ,লজ্জাস্থানের ইনফেকশনেরক্ষত,একশিরার অন্ডো কোশের বিচি ছোট বড়, মেরুদন্ডের হাড়ক্ষয় ও ব্যাথা, সাদা ¯্রাব, রক্ত ¯্রাব, জন্ডিস, হাপানি ও শ্বাসকষ্ট,প্যরালাইসেস, স্ট্রোকের রোগী, বাচ্চাদের বিছানায় প্র¯্রাব, বড়দের বহুমুত্র, এ্যকজিমা,দাদ, কৃমিরোগ,আমেশা, ও মলদ্বার থেকে রক্ত পড়া এবং জিনে ধরা ,মৃগীবাই, স্বামী স্ত্রীর মধ্যে অমিলকে মিল করা,বিষ বাত গিটে বাত, রস বাত, সাপে কাটা রোগীকে সুস্থ করাসহ গ্রান্টি সহকারে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করে থাকেন।
উপজেলার খড়ম খালী গ্রামের স্ট্রোকে আক্রান্ত এবং প্যারালাইজড রোগী মো: জালাল সরদার,আড়-য়াবর্ণী গ্রামের আপতাব উদ্দীন, আড়-য়াবর্ণী চর পাড়া গ্রামের রওশন শেখ ও তার স্ত্রী, আড়-য়াবর্নী গ্রামের আতিয়ার খান, নান্টু দর্জি সহ অনেকে জানান, এমদাদুল একজন ভন্ড কবিরাজ। সে চিকিৎসার নামে মানুষকে প্রতারিত করে চলেছে বছরের পর বছর। অপ-চিকিৎসা করে রোগীদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আপরদিকে প্রতিরোগীর কাছ থেকে ২০০০ টাকা থেকে জটিল রোগী হলে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিচ্ছে। সে প্রতারনার শিকার তারা নিজেরা বলে উল্লেখ করেন। ভুক্তভোগীরা কথিত কবিরাজ ইমদাদুল ইসলাম খলিফার ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন।
কবিরাজ নাম ধারী ইমদাদুল ইসলামের প্রতারনার বিষয় খড়ম খালী গ্রামের স্ট্রোকে আক্রান্ত এবং প্যারালাইজড রোগী মো: জালাল সরদার জানান, গ্রান্টিসহকারে চিকিৎসা দিয়ে ভালো করবে বলে সে আমাকে ওষুধ প্রয়োগ করে, তার পর থেকে আমার হাত ফুলে উঠছে। এভাবে প্রতারনা ফাঁদে ফেলে আমার মত অনেকের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন হাজার হাজার টাকা।
একই সাথে জি¦ন চালানও যাদু, টোনা করে স্বামী স্ত্রীর অমিলকে মিল করে দেন, সংসারে কলহ থাকলে তা দূর করে দেন। অন্যের সাথে চলে যাওয়া স্বামী/স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে পারেন বলে তার প্রচার পত্রে উল্লেখ রয়েছে। তার যাদুর ভয়ে দুর্বল প্রকৃতির অনেকে শারীরিক এবং আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েও ভয়ে মুখ খুলতে সাহস টুকু পাচ্ছেনা। যদি নাকি যাদু করে বড় ধরনের কোন ক্ষতি করে!
চিতলমারী উপজেলার খড়মখালী গ্রাম ব্যাতিত তার আরেকটি চেম্বার রয়েছে ঢাকার মিরপুরের পশ্চিম ভাসানটেক কালভার্ট এলাকার নুর আলমের বাড়ীতে বলে প্রচার পত্রে উল্লেখ রয়েছে। তবে সরকারী কোন রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার তার প্রচার পত্রে পাওয়া যায়নি। কথিত কবিরাজ খলিফা ইমদাদুল ইসলামের সাথে মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি দীর্ঘদিন ধরে এ পেশায় জড়িত বলে জানান। এর কোন বৈধ কাগজপত্র বা বৈধতা আছে কিনা এমন প্রশ্নের কোন জবাব তিনি দেননি। তবে রোগীর অবস্থার উপর তার ফি, বা ওষুধ দেয়া হয়। সেটা হতে পারে ২ থেকে ৫, ৫ থেকে ১০ এবং ২০ হাজার টাকাও লাগতে পারে এমনটি তিনি বলেন।
চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও প,প, কর্মকর্তা ডাঃ মামুন হাসানের সাথে কথা হলে তিনি জানান গ্রাম- গঞ্জে এধরনের কথিত কবিরাজের প্রতারনা ফাঁদে পড়ে অনেক রোগী অকালে প্রাণ হারাচ্ছে। এদেরকে আইনের আওতায় আনতে প্রয়োজনে উপজেলা আইন শৃঙ্খলা উন্নয়ন সভায় প্রস্তাব আনা দরকার। অথবা মোবাইল কোর্ট বসিয়ে জেল জরিমানা করা প্রয়োজন।
এব্যপারে চিতলমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ এইস এম কামরুজ্জামানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, এ বিষয়ে থানায় কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।