দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আপন চাচা-ভাতিজা। ভোটের মাঠে দুই চাচা-ভাতিজা আলাদা প্রতীকে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা তুলে ধরছেন। দিন শেষে ফিরছেন নিজ নিজ বাড়িতে। দুই চাচা-ভাতিজা হলেন- মো. আবদুর রহিম ও মো. ফয়জার রহমান। আগামী ৫ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে ১নং নশরতপুর ইউনিয়নে আপন চাচা-ভাতিজা ৭ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চাচা মো. আবদুর রহিম মোরগ ও ভাতিজা মো. ফয়জার রহমান টিউবওয়েল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চাচা মো. আবদুর রহিম ও ভাতিজা মো. ফয়জার রহমান দু’জনই নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। চাচা মো. আবদুর রহিম এবারসহ ৩ বার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি ইতঃপূর্বে ২ বার নির্বাচন করে জয়লাভ করতে পারেননি। এবারেও তিনি প্রার্থী হয়েছেন। পারিবারিক বিদ্র্রোহী প্রার্থী হয়ে দুই চাচা-ভাতিজা-ই প্রার্থী হয়েছেন। প্রথমে দু’জনই ভেবেছিলেন তাদের মধ্যে সমঝোতা হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। তাই দু’জনই চূড়ান্তভাবে প্রার্থী হন। আস্থা রাখেন ভোটারদের ওপর। নিজের গ্রহণযোগ্যতার বিচারের ভার ছেড়ে দেন ভোটারদের হাতে। দুই চাচা-ভাতিজা-ই দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন নির্বাচনী মাঠ। উভয়েই নির্বাচনে জয়লাভের ব্যাপারে আশাবাদী। আপন দুই চাচা-ভাতিজার ভোটযুদ্ধ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে নানা কৌতুহল। এ নিয়ে ভোটারদের মধ্যে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। কে বসবেন চেয়ারে? চাচা-ভাতিজা নাকি অন্য কোন প্রার্থী। আত্মসম্মানের এ লড়াইয়ে তাদের মধ্যে সম্পর্কটা যেন আপাতত আপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
একই ওয়ার্ডে চাচা-ভাতিজার ভোটযুদ্ধ দেখতে ভোটাররা বেশ উৎসুক। তাদের বাইরে এ আসনে সদস্য পদে আরো ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- মো. রফিকুল ইসলাম হেলাল (ফুটবল), মো. আসাদুল্লাহ আল গালিব (ভ্যানগাড়ি), মো. রশিদুল ইসলাম (তালা) ও মোছা. সোবেদা বেগম (বৈদ্যুতিক পাখা)।
চাচা মো. আবদুর রহিম বলেন, তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে বেশ আগে থেকেই মাঠে গণসংযোগ করছিলেন। তখন ভাতিজা মো. ফয়জার রহমানের নির্বাচনে অংশগ্রহণে আগ্রহ ছিল না। হঠাৎ করে সেও নির্বাচনে প্রার্থী হন। এখন ভোটাররাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
মো. ফয়জার রহমান বলেন, তিনিও নির্বাচনে অংশ নিতে আগে থেকেই নিজের প্রার্থীতা ঘোষণা করেন। পরে নিজেদের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় দু’জনেই প্রার্থী হয়েছেন। দুই চাচা-ভাতিজার নির্বাচনী যুদ্ধ এবার এলাকাবাসীর মধ্যে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
নশরতপুর ইউনিয়নের দায়িত্বরত রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আবু সরফরাজ হোসেন জানান, ওই ওয়ার্ডে চাচা-ভাতিজাসহ আরো ৪ জন প্রার্থী সদস্যপদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি নশরতপুর ইউনিয়নে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।