ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চের মালিক শেখ হামজালালসহ অজ্ঞাত ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন স্থানীয় একজন আইনজীবী। তরুণ আইনজীবী ও নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাজমুল ইসলাম নাসির বাদী হয়ে বরগুনা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা দায়ের করেন।
রোববার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ মাহবুব আলম মামলাটি আমলে নিয়ে বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এজাহার গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। লঞ্চের মালিকের ঠিকানা দেখানো হয়েছে সুত্রাপুর, পুরাতন ঢাকা।
মামলায় ৬ জনের সাক্ষির মধ্যে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ আল মুজাহিদ ও সচেতন নাগরিক কমিটি সনাকের সভাপতি অ্যাড. এমডি আনিসুর রহমান রয়েছেন।।তারা দু’জনেই ঘটনার সময় ওই লঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে বরগুনা গামী লঞ্চটি ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এলে অগ্নিকান্ডের সূচণা হয়। এ অগ্নিকা-ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে ৪২ জনের মৃত্যু হয়। অসংখ্য যাত্রী আগুনে পুড়ে বরিশাল ও ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। শুক্রবার দগ্ধ ১০টি মরদেহ সনাক্ত হলে তাদের স্বজনদের নিকট তা হস্তান্তর করেন। সকাল ১১টায় বরগুনার সার্কিট হাউজ মাঠে কয়েক হাজার জনতার অংশগ্রহণে জানাযা শেষে ২৩টি অজ্ঞাত মরদেহ বরগুনার পোটকাখালী গণকবরে দাফন করা হয়।
এ মামলায় বাদী অ্যাড. নাজমুল ইসলাম নাসির উল্লেখ করেন ঘটনার দিন লঞ্চটিতে আগুন লাগার পরে ভাসতে ভাসতে ঝালকাঠি জেলার কলাবাগান এলাকার কিনারায় পৌছলে ফায়ার সার্ভিস ও ঝালকাঠি প্রশাসনের লোকজন এসে কতিপয় যাত্রীদের অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে ঝালকাঠি জেনারেল হাসপাতালে এবং বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
ঘটনার সময় হতে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও আসামি স্বয়ং অথবা তার কোন প্রতিনিধি ঘটনা স্থলে স্বজন হারানো অভিভাবকদের শান্তনা পর্যন্ত প্রদান করেননি। আসামি পক্ষ বে-পরোয়া ভাবে লঞ্চ চালায়, ভাড়ার জন্য নিরাপত্তাহীন, অতিরিক্ত বোঝাইকৃত লঞ্চ যোগে পানিপথে লোক বহন করে, অগ্নি বা দাহ্য ব¯তু সম্পর্কে ত্রুটি রেখে, বিস্ফোরক পদার্থ ও যন্ত্রপাতি সম্পর্কে ত্রুটি রেখে অবহেলা ও বে- পরোয়া যান চালানোর মাধ্যমে শত শত যাত্রীদের মৃত্য ঘটানোর অপরাধ করেছেন। এ মৃত্যুর জন্য লঞ্চ মালিক নিজে দায়ী।