নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র ইউএনও পার্কের চিত্র পাল্টে গেছে। নতুন সাজে বদলে যাওয়া পার্ক এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। আগামী বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিনোদন কেন্দ্রের উদ্বোধন করা হবে। নাটোর সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে বাগাতিপাড়া উপজেলা সদরে বড়াল নদীর পাড় ঘেঁষে গড়ে উঠেছে এই পার্ক। নদীর ওপরে পাশাপাশি দুটি ব্রীজ। রেল এবং সড়কের গার্ডার ব্রীজে সৌন্দর্য্য বাড়িয়ে দিয়েছে। মনোরম পরিবেশে একটু সুস্থ বিনোদনের জন্য বয়োবৃদ্ধ, শিশু থেকে শুরু করে সবার আগমনে মুখরিত হয় এই পার্ক। একসময়ে যেখানে ছিল মাদকের আড্ডা, অসামাজিক কার্যকলাপসহ বিভিন্ন অপকর্মের নিরাপদ স্থান, সেখানেই গড়ে উঠেছে বিনোদন কেন্দ্র।
ইউএনও কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সাধারন মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে তৎকালীন ইউএনও খন্দকার ফরহাদ আহমদ এই পার্কটি গড়ে তোলেন। সেসময় বেশ কিছু স্থানে বিভিন্ন ভাষ্কর্য স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু রক্ষণা-বেক্ষণের অভাবে ধীরে ধীরে সৌন্দর্য্য হারায় পার্কটি। বিষয়টিকে মাথায় রেখে বর্তমান ইউএনও প্রিয়াংকা দেবী পাল বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহন করেন। তিনি উপজেলা প্রশাসনের পরিচালনায় ব্যক্তি অংশীদারিত্বকে যুক্ত করেন। হাবিবুর রহমান পলাশ নামের এক ব্যক্তি পার্কের সাথে অংশীদারিত্ব নেন। এরপর থেকেই পাল্টে যেতে থাকে চিত্র।
রোববার দুপুরে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সম্প্রতি গার্ডার ব্রীজ ঘেঁষে নির্মাণ করা হয়েছে মুল ফটক। ওপরে ড্রাগন ও ডাইনোসরের ভাষ্কর্য স্থাপন করা হয়েছে। পরেই সীমানা প্রাচীরের ভেতরের প্রবেশের আরেকটি পথ। সেখানে আনারসের প্রতিকৃতি। বিনোদন প্রেমীদের আকৃষ্ট করতে ভেতরে স্থাপন করা হয়েছে বেশ কিছু স্ট্র্যাচু। সিংহ, মাছ মুখে ঈগল, ব্যাঙ, দোয়েল, হরিণ, বক, ময়ূর, কুমির, শাপলা ফুলের ভাষ্কর্যসহ নানান বৈচিত্র্য আনা হয়েছে। রাখা হয়েছে পানির ফোয়ারা, এর নীচে রঙিন মাছ। অপর পাশে রয়েছে বিশাল ডাইনোসর। তার পাশেই নাগর দোলা এবং শিশুদের জন্য দোলনা। সীমানা প্রাচীরের পুরোটা জুড়ে বিভিন্ন প্রাণীর আঁকানো ছবি শিশুদের বিনোদনের খোরাক যোগাবে। মাঝে মাঝে খেজুর গাছের গোড়ায় সহ বসার ব্যবস্থা। তাছাড়া বিভিন্ন ফুলের এবং সৌন্দর্যবর্ধক গাছ লাগানো হয়েছে। আর নদীতে রাখা হয়েছে প্যাডেল বোট। যেন গ্রামের মধ্যে এ এক কল্পনাপুরী।
ইউএনও প্রিয়াংকা দেবী পাল বলেন, একসময়ের মাদকের আড্ডা, অসামাজিক কার্যকলাপসহ নানা অপকর্মের নিরাপদ স্থানে গড়ে তোলা হয়েছে এই পার্ক। উপজেলার একমাত্র পার্কটি রক্ষণা-বেক্ষণ এবং সুস্থ বিনোদনের কেন্দ্র গড়ে তুলতে পলাশ নামের ব্যক্তির সাথে উপজেলা প্রশাসন অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে চুক্তি স্থাপন করেছে। এতে পুরো আয়ের ৭০ ভাগ পলাশ এবং ৩০ ভাগ আয় উপজেলা পরিষদের খাতে জমা হবে। আর সবকিছু রক্ষণা-বেক্ষণ করবে পলাশ। এর ফলে ইউএনও পার্কের সুষ্ঠ রক্ষণা-বেক্ষন হবে। একই সাথে গ্রামের মানুষ পাবে সুস্থ বিনোদনের একটি পরিবেশ।