বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) এলপিজি ক্রয়ে গ্রাহকের আর্থিক ক্ষতি কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে। ওই লক্ষ্যে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) সিলিন্ডার বিক্রিতে পরিবেশক ও খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের প্রতিষ্ঠানে মূল্য তালিকা প্রদর্শনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কারণ এলপি গ্যাসের মূল্য সমন্বয় করে বিইআরসি থেকে আদেশ জারি করা হলেও বিক্রেতারা তা যথাযথভাবে পরিপালন করে না। এমন অবস্থায় এলপিজির মূল্য প্রদর্শনের জন্য নতুন করে একটি ফরমেট তৈরি করেছে কমিশন। ইতিমধ্যে নতুন ফরমেটটি বিইআরসির ওয়েবসাইটে দেয়া হয়েছে। কারণ বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি এলপি গ্যাসের মূল্য সমন্বয়ের কাজ করছে কমিশন। সৌদি আরামকোর কাছ থেকে কেনা মূল্যের ভিত্তিতে দেশের বাজারে প্রতি মাসের শুরুতে ওই মূল্য সমন্বয় করা হচ্ছে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিইআরসি প্রতি মাসেই এলপি গ্যাসের মূল্য সমন্বয় করে থাকে। কিন্তু পরিবেশক থেকে শুরু করে খুচরা ব্যবসায়ী পর্যন্ত সরবরাহ চেইনের প্রতিটি স্তরেই ওই মূল্য মানা হচ্ছে না। বরং গ্রাহকদের কাছে কমিশন নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ১০০-২০০ টাকা বেশি দামে প্রতি সিলিন্ডার এলপি গ্যাস বিক্রি করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে গ্রাহকের আর্থিক ক্ষতি কমাতেই নতুন ফরমেট চালু করেছে কমিশন। এখন থেকে এলপি গ্যাস বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোয় মূল্য তালিকা থাকতে হবে।
সূত্র জানায়, বোতলজাতকৃত এলপি গ্যাসের মূল্য প্রদর্শনের ফরমেটে বিইআরসি আদেশ নম্বর, কত তারিখে আদেশ দেয়া হয়েছে তা উল্লেখ করার কথা বলা হয়েছে। তাছাড়া নতুন ফরমেটে খুচরা বিক্রেতা পর্যায়ে সাড়ে ৫ কেজির এলপি গ্যাস সিলিন্ডার থেকে ৪৫ কেজি সিলিন্ডার পর্যন্ত কত টাকায় বিক্রি হবে তাও উল্লেখ করতে হবে। একই সঙ্গে অটোগ্যাস ব্যবসায়ীদেরও ওই মূল্য প্রদর্শন করতে হবে। ফরমেটে ভোক্তা পর্যায়ে অটোগ্যাসের লিটারপ্রতি মূল্যও উল্লেখ করতে বলা হয়েছে। তাছাড়া রেটিকুলেটেড পদ্ধতিতে সরবরাহকৃত এলপিজির মূল্য প্রদর্শনেরও কথা বলা হয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, এলপি গ্যাসের মূল্য সমন্বয়ের পাশাপাশি মূল্য তালিকা ঝুলিয়ে দেয়ার বিষয়ে কমিশন থেকে বারবার জানানো হলেও বেশির ভাগ পরিবেশক ও খুচরা বিক্রেতা ওই আদেশ মানছে না। রাজধানীর এলপি গ্যাসের খুচরা ব্যবসায়ীদের দোকানে কমিশনের মূল্য তালিকা প্রদর্শন করা হয় না। এমনকি রাজধানীর বাইরেও ওই ধরনের কোনো মূল্য তালিকা দেখা যায় না। অন্যদিকে গ্রাহক পর্যায়েও এ-সংক্রান্ত সুস্পষ্ট কোনো ধারণা নেই।
এ প্রসঙ্গে বিইআরসির সদস্য মো. মকবুল-ই-ইলাহী চৌধুরী জানান, প্রতি মাসে এলপি গ্যাসের মূল্য সমন্বয়ের সঙ্গে মূল্য প্রদর্শনের আদেশ দেয়া হচ্ছে। কিন্তু বিক্রেতারা অধিকাংশ ক্ষেত্রে ওই আদেশ মানছে না। যদিও শুরু থেকেই বিইআরসি এ বিষয়ে বলে আসছে। নতুন করে কমিশনের ওয়েবসাইটে এ সম্পর্কিত একটি ফরমেট দেয়া হয়েছে, যাতে তারা এটি বান্তবায়ন করা হয়। যারা মানবে না তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।