বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি ছোট দেশ। এ দেশের মানুষ সহজ ও শান্তিপ্রিয়। কিন্তু দেশের মানুষের ওপর থেকে শান্তিপ্রিয় তকমা যেন ক্রমাগত মুছে যাচ্ছে। দেশে অপরাধপ্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন শুরুর পর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। ঘটেছে প্রাণহানির ঘটনাও। কোথাও কোথাও অস্ত্র প্রদর্শনের ঘটনা ঘটেছে। আর গত বৃহস্পতিবার সিরাজগঞ্জে যা ঘটে গেল তা নিয়ে কী বলবে প্রশাসন।
এটি স্পষ্ট যে, জাতীয় নির্বাচনের দিন যত এগিয়ে আসবে, রাজনীতির মাঠ ততই উত্তপ্ত হবে। এখন খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে আন্দোলন জমানোর চেষ্টা করছে বিএনপি। জেলায় জেলায় সমাবেশ করছে তারা। এ ধরনের রাজনৈতিক সমাবেশ যেখানেই হোক না কেন, সেখানে উত্তেজনা সৃষ্টি হতেই পারে। বিশেষ করে উভয় পক্ষ যদি মুখোমুখি অবস্থানে যায়, তাহলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতেই পারে। সে ক্ষেত্রে স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনকে আগে থেকেই সচেতন থাকতে হবে। কারণ রাজনৈতিক অসহিষ্ণুতা এখন চরম পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। অবস্থা বিবেচনা করেই সচেতন নাগরিকদের পক্ষ থেকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশের বিশেষ অভিযান পরিচালনার আহ্বান জানানো হয়েছিল।
গত নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে মাঠ পর্যায়ের পুলিশকে নির্দেশ দেয় পুলিশ সদর দপ্তর। অবৈধ অস্ত্রের যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধে মাঠ পর্যায়ে সতর্ক হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। একটি নির্দিষ্ট এলাকায় কতজনের কাছে বৈধ অস্ত্র আছে, সে সম্পর্কে থানার অবহিত থাকে। সব থানায় ‘গান রেজিস্টার’ আছে। নির্বাচনের আগে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর চোখ এড়িয়ে অনেকে বৈধ অস্ত্র দেখান। এর ফাঁকে অনেকে অবৈধ অস্ত্র নিয়েও ঘোরাফেরা করবেন, এমন সন্দেহও একেবারে অমূলক নয়। সিরাজগঞ্জে কি তেমনটিই ঘটেছে? সেখানে অস্ত্রের এমন প্রকাশ্য ব্যবহার কী করে সম্ভব হলো?
বিএনপি দাবি করছে, খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও মুক্তির দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে মিছিল নিয়ে আসার পথে পূর্বপরিকল্পিতভাবে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের দাবি, বিএনপির নেতাকর্মীরা শহরের ইসলামিয়া কলেজ মাঠে সমাবেশে যাওয়ার পথে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক স্লোগান দেন এবং ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।
সিরাজগঞ্জে প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য একটি অশনিসংকেত। অস্ত্রধারীদের ছবি গণমাধ্যমে এসেছে। সরকার অস্ত্রধারীদের গ্রেপ্তার করে দ্রুত আইনের মুখোমুখি করবে এটাই প্রত্যাশা।