পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার রফিকুল ইসলাম (৩৫) নামে এক যুবককে হত্যার দায়ে চারজনের যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (০৪ জানুয়ারি) দুপুরে পাবনার বিশেষ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আহসান তারেক এ রায় দেন। মামলায় ১৯ জনকে বেসকুর খালাস দেয়া হয়েছে।
দ-প্রাপ্তরা হলেন- সাঁথিয়া উপজেলার নন্দনপুর ইউনিয়নের মাহমুদপুর গ্রামের হাবিবর মুন্সির ছেলে ওয়াশিম মুন্সি (৩৯), নন্দনপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে মোস্তফা (৪২), গোবিন্দপুর গ্রামের খাজু মন্ডলের ছেলে মিরাজুল ইসলাম (৪৩) ও গোবিন্দপুর গ্রামের ফয়জাল হোসেনের ছেলে শাহাদুল শাহাদৎ (৩৯)। রায়ের সময় শাহাদত ও ওয়াসিম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অপর দু’জন পলাতক রয়েছেন। নিহত রফিকুল সাঁথিয়া উপজেলার নন্দনপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর মহল্লার শাহজাহান আলীর ছেলে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী দেওয়ান মজনুল হক মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে জানান, ২০০৬ সালের ১৯ অক্টোবর দুপুরে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে পার্শ্ববর্তী সুন্দরকান্দি গ্রামে শ্বশুর আনছার আলীর বাড়িতে পরিবারসহ বেড়াতে যান রফিকুল। ঈদের আগের রাতে এলাকার অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে রফিকুলকে ডেকে নিয়ে শ্বাসরোধ ও কুপিয়ে হত্যা করে একটি ধানক্ষেতে মরদেহ ফেলে পালিয়ে যান আসামিরা। পরেরদিন সকালে লাশটি দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
২৬ অক্টোবর রাতে ২৫-৩০ জনের নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাত কয়েকজনের নামে সাঁথিয়া থানার এসআই আজিজুর রহমান একটি মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে ২৩ জনের নামে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
পুলিশ ফোনের কললিস্ট ধরে তদন্ত করে সবাইকে গ্রেফতার করেন। দীর্ঘ শুনানির পর মঙ্গলবার আদালত হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ও পরিকল্পনাকারী চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদ- দেন। বাকি ১৯ জনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সনৎ কুমার বাবু, অ্যাডভোকেট তৌফিক ইমাম খান বলেন, আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব। সেখান থেকে দ-প্রাপ্তরা নিরপরাধ হিসেবে খালাস পাবেন বলে আশা করছি।
তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী দেওয়ান মজনুল হক বলেন, এই মামলায় তারা অপরাধী প্রমাণিত হয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছেন আদালত। হত্যার সঙ্গে জড়িত প্রমাণিত না হওয়ায় বাকি ১৯ জনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।