চিরিরবন্দরে ৫ম ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দুটি ইউনিয়নে বিজিবি,র্যাব ও পুলিশের সাথে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষের সময় ৪ রাউন্ড গ্যাস সেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ও ৬ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছোঁড়া হয়েছে। উত্তেজিত জনতার বিক্ষিপ্তভাবে ছোঁড়া ইটের টুকরোর আঘাতে ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় বিজিবির ৫ সদস্য, র্যাবের ৩ সদস্য ও পুলিশের ৯ জন ও সাধারণ জনগণের মধ্যে ৩ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় বিজিবি পক্ষ থেকে বাদি হয়ে চিরিরবন্দর থানায় কেন্দ্র ভাংচুর, হামলা, গাড়ী ভাংচুর, ক্ষতিসাধন ইত্যাদি বিষয়ে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং ৪, তাং-০৬-০১-২০২২। ওই মামলায় ৮ জনকে আটক করা হয়েছে।
থানা সুত্রে জানা গেছে, গত ৫ জানুয়ারী নির্বাচনের দিন সন্ধা ৭ টার দিকে উপজেলার আলোকডিহি ইউনিয়নের গছাহার শাহপাড়া জরিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১০২ নং কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষনাকে কেন্দ্র করে প্রিজাইডিং অফিসারের উপর স্থানীয় জনতা চড়াও হলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় জনতা উত্তেজিত হয়ে উঠলে পুলিশ ৪ রাউন্ড গ্যাস সেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নেয়।
অপরদিকে ফতেজংপুর ইউনিয়নের উত্তর পলাশবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯ নং কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় জনতা কেন্দ্রে ভাংচুরের চেষ্টা চালালে বিজিবি, র্যাব ও পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় উত্তেজিত জনতা বেআইনী ভাবে আইনশৃংখলা বাহিনীর উপর চড়াও হয়ে বিজিবির গাড়ী ভাংচুর, পুলিশের গাড়ী ভাংচুর ও নির্বাচনী কাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টর ভাংচুর, কেন্দ্র ভাংচুর, হামলা, গাড়ী ভাংচুর, ক্ষতিসাধন করলে আইনশৃংখলা বাহিনীর পক্ষ থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নিতে ৬ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছোঁড়া হয়। এ সময় ৪২ বিজিবির রিপন মিয়া, ইলিয়াস হোসেন,মমিনুর রহমান, সঞ্জয় চন্দ্র, মোঃ মনিরুজ্জামান, র্যাব ১৩ সিপিসি-১ এর ফুলমিয়া, মোবারক হোসেন বেগ, জুয়েল রানা ও পুলিশের এসআই তাজুল ইসলাম, এস আই হাসান ফারুক, এএসআই বেলাল, এএসআই রফিকুল ইসলাম, কনষ্টেবেল আবু তাহের, শফিউল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম, তুষার রায়, ইসমত আরা আহত হন।
হাসপাতাল সুত্রে জানা যায় সাধারণ জনগণের মধ্যে আফজাল হোসেন (৩৫), বাদশা (৩৫) মুকুল রায় (৪২), মেরিনা বেগম (৫১) আহত হয়েছেন।
থানার অফিসার ইনচার্জ সুব্রত কুমার সরকার জানান, নির্বাচনে বড় ধরনের কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। দুটি কেন্দ্রে কেন্দ্র ভাংচুর, হামলা, গাড়ী ভাংচুর, ক্ষতিসাধন করা হয়েছে আইনশৃংখলা বাহিনী আইনি পদক্ষেপ নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নিয়েছে। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নিতে ৪ রাউন্ড গ্যাস সেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ও ৬ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছোঁড়া হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হয়েছে। গোপনীয়তার স্বার্থে আটককৃত ৮ জনের ও অজ্ঞাতদের নাম সরবরাহ করা হচ্ছে না। মামলার কাগজপত্রাদি আদালতে রিসিভ হলে দেয়া যেতে পারে। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শি কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রিজাইডিং অফিসার ফলাফল পাল্টে দিয়ে কেন্দ্রে ফলাফল না দিয়ে চলে যেতে চাইলে স্থানীয় জনতা ফলাফল প্রকাশের দাবি জানালে আইনশৃংখলা বাহিনী প্রথমে লাঠিচার্জ করে। জনতা উত্তেজিত হয়ে উঠলে উত্তেজিত জনতার উপর ৪ রাউন্ড গ্যাস সেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ও ৬ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছোড়ে। বর্তমানে পরিস্থিতি থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পুলিশী অভিযানে এলাকা পুরুষ শুন্য হয়ে পড়েছে।